করোনা মহামারির সময় যখন সিলেটের সব চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ ছিল, তখন দুয়ার খুলে দিয়েছিল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল। দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকা সরকারি এ হাসপাতাল দুঃসময়ের বন্ধু হয়ে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে সেবা দিয়ে যায় সিলেট বিভাগের হাজারো করোনা আক্রান্ত রোগীকে। কিন্তু কভিড সংকট কাটার সঙ্গে সঙ্গে আবারও তিমিরে চলে গেছে হাসপাতালটি। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে এখন শুধু নেই আর নেই। চিকিৎসক সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে হাসপাতালের কয়েকটি বিভাগের সেবা কার্যক্রম। কভিডের সময় ৮৮ জন চিকিৎসক থাকলেও এখন আছে মাত্র ১৫ জন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ছাড়াই চলছে আইসিইউ বিভাগ। আর নিরাপত্তাকর্মীর অভাবে ১০০ শয্যার হাসপাতালটি এখন পুরোই অরক্ষিত।
শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালটি সিলেটের মানুষের কাছে ‘সদর হাসপাতাল’ ও ‘পুরান মেডিকেল’ হিসেবে পরিচিত। করোনা মহামারির সময় হাসপাতালটিকে কভিড ডেডিকেটেড ঘোষণা করা হয়। তখন হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিলেন ৮৮ জন চিকিৎসক। ১৬ শয্যার আইসিইউ বিভাগ ছিল পুরোপুরি সচল। কভিডের কঠিন সময় পার করার পর ধীরে ধীরে কদর কমতে থাকে হাসপাতালটির। উদাসীন হতে থাকে কর্তৃপক্ষও। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, নিরাপত্তাব্যবস্থা এখন হাসপাতালটির অন্যতম সমস্যা। ১০০ শয্যার হাসপাতালের নিরাপত্তায় কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই। দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তায় আনসার সদস্যরা কাজ করলেও শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ভাগ্যে জোটেনি আনসার। এ সুযোগে প্রায়ই হাসপাতালের এসি লাইন ও পানির পাইপ কেটে নিয়ে যাচ্ছে চুরেরা। এ ছাড়া হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা চুরির শিকার হচ্ছেন। সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্যরা কৌশলে মোবাইল ফোন, টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে চম্পট দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, সামর্থ্য অনুযায়ী হাসপাতালের রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান হলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।