শাপলা চত্বরে গণহত্যার শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা এবং পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন বিশেষ করে শহীদ পরিবার ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের ভাতা প্রদানসহ সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছে শাপলা স্মৃতি সংসদ।
গতকাল রাজধানীর কাকরাইল ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তন কনফারেন্সে ‘শাপলা চত্বর : শাহাদাতের রক্তে রাঙা অবিনাশী চেতনা’ শীর্ষক কনফারেন্সে এসব দাবি তুলে ধরা হয়। শাপলা স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিরা। প্রোগ্রামে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে চালিত রাষ্ট্রীয় গণহত্যার ওপর প্রামাণ্য ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয় ও শহীদদের জীবনভিত্তিক স্মারকগ্রন্থ ‘শহীদনামা’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। কনফারেন্সে ঘোষণা করা হয় শাপলা গণহত্যা নিয়ে যাঁরা সংবাদ প্রতিবেদন ও গবেষণা, সাহিত্য-রচনা, চিকিৎসা সহায়তা, আইনগত লড়াই কিংবা স্মৃতি সংরক্ষণমূলক উদ্যোগে বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন তাঁদের সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে ‘শাপলা কেন্দ্রিক বিভিন্ন কাজে অংশীজনের সম্মাননা ও সম্মিলনী ২০২৫’ আয়োজন করা হবে ৩০ আগস্ট। কনফারেন্স বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা হাসান জুনাইদ ও মাওলানা আল আবিদ শাকিরের পরিচালনায় বক্তব্য দেন, হেফজতে ইসলাম বাংলাদেশে মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ প্রমুখ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার জীবনে কিছু সময় কেটেছে আয়নাঘরে। কিছু সময় জেলখানায়। কিছু সময় কেটেছে প্রবাসে। এভাবেই কেটেছে আমার জীবনের দীর্ঘ দেড় যুগ সময়। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি আরও কয়েকদিন বাঁচিয়ে রাখেন শাপলার বিচার দেখার জন্য।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর জুলাই গণ অভ্যুত্থানে আলেম সমাজের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, এই আন্দোলন যদি আলেম-ওলামারা শরিক না হতেন তাহলে হয়তো এটা আন্দোলন সফল হতো না।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, এই শাপলার ইতিহাস যদি মুছে ফেলা হয় তাহলে আমাদের জাতীয় জীবনের অনেক কিছুই মুছে ফেলা হবে, তাই এই চেতনা শুধু আমরা লালন করলেই হবে না, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে।
আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, শাপলা চত্বর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মূল অনুপ্রেরণা। ভারতীয় আধিপত্যবাদী চাপিয়ে দেওয়ার জন্য বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আলেমদের ওপর জুলুম নির্যাতন এবং কারাবরণ করিয়েছে। দিল্লির আধিপত্যবাদ মোকাবিলা করাই সবচেয়ে বড় প্রেম। আর এই কাজটি করেছে দেশের ওলামায়ে কেরাম।