রাজধানীর শেরেবাংলানগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আজ শুরু হচ্ছে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২৭ জুন পর্যন্ত চলবে পরিবেশ মেলা আর বৃক্ষমেলা চলবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
এ উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নির্মল, সুন্দর ও সবুজ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে অন্তত একটি করে গাছ লাগিয়ে বৃক্ষরোপণ অভিযান সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার অপরিহার্য উপাদান হলো বৃক্ষ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বৃক্ষ ও বনের গুরুত্ব অপরিসীম। অন্তর্বর্তী সরকার টেকসই বন ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বন সম্প্রসারণ, উন্নয়ন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া বনাঞ্চল পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বাসযোগ্য নগর গড়তে নগর বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের এসব উদ্যোগ আরও বেগবান করতে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বিগত কয়েক দশকে ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্লাস্টিক সামগ্রীর বহুমুখী ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, বিশেষ করে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের অত্যধিক উৎপাদন, যথেচ্ছ ব্যবহার ও অব্যবস্থাপনার ফলে পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। আমাদের পরিবেশ ও প্রতিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিতে প্লাস্টিক দূষণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় প্লাস্টিকদূষণ নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পলিথিন শপিংব্যাগের উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবারও বিশ্ব পরিবেশ দিবস, পরিবেশ মেলা, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদানের জন্য জাতীয় পরিবেশ পদক, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ জাতীয় পুরস্কার এবং বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের মধ্যে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করা হবে।
মেলা উপলক্ষে সারা দেশে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিতর্ক, সেমিনার, শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণসহ নানান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ বছরের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’ এবং বৃক্ষরোপণ অভিযানের প্রতিপাদ্য ‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’।