কেবল একাদশ শ্রেণিতে পড়ে শরিফা। এই বয়সেই সংসার নিয়ে তার চিন্তার অন্ত নেই। বাবা চায়ের দোকান চালান। বাবার স্বল্প আয়ে সংসারের চাকাই ঘোরে না ঠিকমতো। পড়ালেখা করতে গিয়ে শরিফা পড়েছে নানান বিড়ম্বনায়। লালমনিরহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজে পড়ে সে। বাবা ঠিকমতো পড়ার খরচ দিতে পারেন না। কিন্তু শরিফা পড়াশোনা করবেই। নিজে কিছু একটা করতে চায়।
এই বয়সে করবেই বা কী। কারও কাছে শুনতে পেল বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কথা। ছুটে এলো শুভসংঘের বন্ধুদের কাছে। এত কম বয়সে সেলাই প্রশিক্ষণ নিতে পারবে কি না, এটা খুব ভয়ে ভয়ে জানতে চাইল।
পরিবারের অবস্থার কথা বিবেচনা করে এবং পড়াশোনার ব্যাপক আগ্রহ দেখে শরিফাকে শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। অল্প দিনের মধ্যেই অন্যদের তুলনায় দ্রুত সেলাইয়ের কাজ শিখে যায় সে। স্বপ্ন তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় আরও বেশি করে কাজ করার। প্রতিদিনই সেলাইয়ের ফোঁড়ে স্বপ্ন বুনেছে কিশোরী মেয়েটি। তার সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করল বসুন্ধরা গ্রুপ।
সেলাইয়ের কাজ শেখার পর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় সেলাই মেশিন। নতুন সেলাই মেশিন পেয়ে শরিফার মুখে ফুটে ওঠে স্বপ্ন জয়ের হাসি। শুধু শরিফা নয়, লালমনিরহাট সদর ও কালিগঞ্জ উপজেলায় সেদিন সেলাই মেশিন পেয়েছেন বিভিন্ন বয়সি সুবিধাবঞ্চিত ৩০ নারী।
বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাসেল মিয়া ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে ফজলুল হক। গতকাল সকালে লালমনিরহাটের গিয়াস উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় হলরুমে প্রশিক্ষিত এসব নারীর হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়ার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা উপপরিচালক মোহাম্মদ মতিয়ার রহমান, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজমুল হোসেন প্রামাণিক, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ফিরোজ হায়দার লাভলু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি রেজাউল করিম মানিক, নিউজ টোয়েন্টি ফোরের লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি রবিউল হাসান, লালমনিরহাট টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আনিছুর রহমান। বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।