সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০৩১ সাল পর্যন্ত তিন স্তরে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি রূপরেখার আওতায় ১৮টি প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এ সময় তারা ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সাড়ে চার বছরে দেশের সড়কে ৩৪ হাজার ৮৯৪টি দুর্ঘটনায় ৩৭ হাজার ৩৮২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানান। এ ছাড়া এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫৯ হাজার ৫৯৭ জন। গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা সংস্কারে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের রূপরেখা : সরকারের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর সংস্কারের রূপরেখা উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের সড়ক পরিবহন খাতে অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্য সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার সড়ক পরিবহনব্যবস্থা সংস্কারে কোনো কমিশন গঠন করেনি। এ জন্য সড়ক ব্যবস্থাপনা সংস্কারে তিন স্তরের রূপরেখা প্রস্তাব করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে রয়েছে স্বল্পমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০২৭), মধ্যমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০২৯) এবং দীর্ঘমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০৩১) রূপরেখা প্রস্তাবনা। স্বল্পমেয়াদি রূপরেখায় বলা হয়েছে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনআরএসসি) পুনর্গঠন, বিআরটিএ, বিআরটিসি এবং ডিটিসিএর শীর্ষপদে কারিগরি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ, কাঠামোগত সংস্কার, ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রশ্ন সড়কসম্পর্কিত হওয়া, যানবাহনের আয়ুষ্কাল ও ডাম্পিং নীতিমালা তৈরি, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গঠিত ট্রাস্ট ফান্ডে প্রতি বছর ৭ কোটি টাকা বরাদ্দসহ ১০টি প্রস্তাবনা। মধ্যমেয়াদি রূপরেখায় আছে রোড ট্রাফিক সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আরটিএমএস) চালু, মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন প্রত্যাহার, রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে কোম্পানিভিত্তিক আধুনিক বাস সার্ভিস চালু, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বাস ও মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ। দীর্ঘমেয়াদি রূপরেখার মধ্যে আছে রাজধানীতে বহুতলবিশিষ্ট হাইড্রোলিক পার্কিং তৈরি, ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, দুর্ঘটনা রোধে সড়ক, রেল ও নৌপরিবহন একত্র করে অভিন্ন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় গঠনের প্রস্তাব। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস খান, উপদেষ্টা মো. আরিফ রাইহান, যুগ্ম সচিব জাহিদুল ইসলাম, মাহমুদ রিয়াজ, যোগাযোগ-বিশেষজ্ঞ একরাম হোসেন, রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর পাহাড়ী ভট্টাচার্য প্রমুখ।