মাটির গানের রূপে-রসে এ দেশের সংগীতপিপাসুদের হৃদয় ভিজিয়েছিলেন মরমি বাউল সাধক শাহ আবদুল করিম। প্রেমের গানে যেমন অগণিত ভগ্ন হৃদয়ের গহিনে নাড়া দিয়েছেন ঠিক তেমনি আবহমান বাংলার লোকায়ত ঐতিহ্য গানে গানে তুলে ধরেছেন এই লোকশিল্পী। গতকাল ছিল লোকগানের মহাসাধকের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাউল ভাবধারার গানের সুরে বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমকে স্মরণ করেছে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট।
সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ আসর। শুরুতেই ছায়ানটের সভাপতি সারওয়ার আলীর কথনে উঠে এলো বাউল সম্রাটের জীবন-দর্শন। তাঁর গান যে কেবল সংগীত নয়, বরং মানবতার বাণী বহনকারী এক চিরন্তন ধ্বনি তা স্পষ্ট হয়ে উঠল শ্রোতাদের সামনে। তারপর পর্দা খুলল সুরের ভুবন। আসরে ফারজানা আফরিন ইভা গাইলেন- ‘প্রাণ নাথ ছাড়িয়া যাইয়ো না’, ‘তোমার পিরিতে বন্ধু গো’-প্রেম, মো. সোহেল রানা গেয়ে শোনান- ‘মন মিলে মানুষ মিলে সময় মিলে না’ ‘জীবন আমার ধন্য যে হায়’, নাজমুল আহসান তুহিন পরিবেশন করেন- ‘মানুষ হয়ে তালাশ করলে মানুষ’, ও ‘দরদিয়ারে বন্ধু’, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস গাইলেন- ‘কেন পিরিতি বাড়াইলি’, আবুল কালাম আজাদ গেয়ে শোনান- ‘মন মজালে ওরে বাউলা গান’ ও ‘আগের বাহাদুরি এখন গেলো কই’, চন্দনা মজুমদারের কণ্ঠে গীত হয়- ‘কুলমান সঁপিলাম তোমারে’, ‘তুমি বিনে আকুল পরান’, ও ‘আমার প্রাণ কান্দে’ বাউল রণেশ ঠাকুর শোনান- ‘মোদের দিন গেলো গোলমালে’, ‘সাধ করে পরেছি গলে’ ও ‘কূল হারা কলঙ্কিনী’।
প্রতিটি গানে ফুটে উঠে বাউলের জীবনসংগ্রামের কাহিনি, আর কালজয়ী বাউল-প্রেম। অনুষ্ঠানস্থলে মূর্ত হয়ে উঠে মরমি সাধক বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম।