১৮ আগস্ট, ২০২২ ১৬:৪৩
সাক্ষাৎকার

‘দুই ঘণ্টায় ১৭০ কোটি টাকা বিক্রির রেকর্ড’

---চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেড

‘দুই ঘণ্টায় ১৭০ কোটি টাকা বিক্রির রেকর্ড’

এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস (রুশো)

দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ। অসংখ্য বিক্রেতাকে লক্ষাধিক ক্রেতার সঙ্গে যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শতাধিক ক্যাটাগরির প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখের অধিক পণ্য কেনাকাটায় দারাজ এখন ক্রেতাদের আস্থার নাম। ক্রেতাদের তাৎক্ষণিক এবং সহজ সুবিধাদানের পাশাপাশি প্রতি মাসে ২০ লাখেরও বেশি পণ্য দেশের সব প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে এই অনলাইন মার্কেটপ্লেস। দারাজের কার্যক্রমের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাথে কথা বলেছেন দারাজ বাংলাদেশের চিফ  করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস। সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো:

বাংলাদেশ প্রতিদিন: দারাজ এর বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে বলুন?
হাসিনুল কুদ্দুস: দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ, এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা অসংখ্য বিক্রেতাকে লক্ষাধিক ক্রেতাদের সাথে যুক্ত করেছে। অনলাইন বিজনেস আরও আগে শুরু হলেও মার্কেটপ্লেস ধারণাটি নতুন, যা ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে একটা সেতুবন্ধন তৈরি করে। দারাজের অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ভার্চুয়াল শপের মাধ্যমে সারা দেশ থেকে বিক্রেতারা যেমন পণ্য প্রদর্শন করছেন, তেমনি ক্রেতারাও সারাদেশ তাদের পছন্দের পণ্য অর্ডার করছেন।

দেশের ই-কমার্স ইকোসিস্টেমের বিকাশে এবং এ খাতে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখতে ২০১৪ সালে ৫ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করে দারাজ বাংলাদেশ। এর পরের বছর অর্থাৎ, ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয় দারাজের সেবা। এর পর থেকে ধীরে ধীরে দারাজের ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে  আমাদের বিক্রেতার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০,০০০ হাজারেরও অধিক। দেশে কর্মসংস্থান তৈরিতেও আমরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখছি। বর্তমানে দারাজে প্রায় ৮ হাজার কর্মী কাজ করছেন।  

বাংলাদেশ প্রতিদিন: আপনাদের ব্যবহারকারী কতজন? দিন প্রতি পণ্যের চাহিদা কেমন?
হাসিনুল কুদ্দুস: দারাজে প্রতিদিন এক মিলিয়ন ইউজার ভিজিট করে থাকে। প্রতিদিন আমাদের ৮৫ হাজারেরও বেশি আর্ডার আসে। প্রবৃদ্ধির কথা যদি বলি, তাহলে বলা যায় বছরপ্রতি আমাদের পণ্য বিক্রির প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ৮৩ শতাংশ। এটা আমাদের দেশে ই-কমার্স সেক্টরের জন্য ইতিবাচক।

বাংলাদেশ প্রতিদিন: গ্রাহকদের এই আস্থা তৈরিতে আপনাদের ভূমিকা? 
হাসিনুল কুদ্দুস: আস্থার বিষয়টা নিয়ে অনেক ধরনের কথাই শোনা যায়, খেয়াল করলে দেখবেন এখানে দুইটা বিষয় রয়েছে। প্রথমত, কিছু ই-কমার্স সাইটের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের ফলে ক্রেতাদের ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকদিন ধরেই এক ধরনের শঙ্কা বিরাজ করছিলো। যদিও এর প্রভাব দারাজের উপর পড়েনি, কারণ আমরা প্রথম থেকেই একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। আমরা জানি ই-কমার্স সেক্টরের জন্য একটি এসওপি হয়েছে, যেখানে ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করতে হবে। সেখানে দারাজ গড়ে ৪ থেকে ৫ দিনে প্রোডাক্ট ডেলিভারি  করে আসছে।

দ্বিতীয়ত, ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য প্রচলিত দোকানের পরিবর্তে অনলাইনে কেনাবেচার অভিজ্ঞতা একবারেই নতুন।  এতে করে, অনেক সময়ই উভয় পক্ষেই আশানুরূপ ফল পায় না। হয়ত একজন ক্রেতা, ছবি দেখে নীল গেঞ্জি অর্ডার করেছিলেন, হাতে পাওয়ার পর দেখলেন লাল গেঞ্জি। এই ক্ষেত্রে, এমনও হতে পারে যে বিক্রেতা ভুল প্রোডাক্ট ডেলিভারি করেছে অথবা ক্রেতা পণ্যের বিবরণ না পড়ে বা অর্ডার করার সময় তার কাঙ্ক্ষিত রঙটি নির্বাচন না করেই অর্ডার করেছে। তাই কোন পণ্য ক্রয় করার আগে দেখে নিতে হবে পণ্যের রিভিউ ও ডেসক্রিপশান। এই ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে  আমরা বিভিন্ন রকমের ট্রেইনিং ও সচেতনতামূলক  উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে দারাজ সেলার সামিট, লাইভ শো (যেখানে রিফান্ড, রিটার্ন  ও কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়), বিভিন্ন জেলায় ও উপজেলায় গিয়ে দারাজ ফ্যানদের সাথে আমরা কথা বলছি এর মাধ্যমে তাদের ডিজিটাল স্বাক্ষরতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন:  নেতিবাচক কোনোকিছু ঘটলে কি রকম ব্যবস্থা নেন?
হাসিনুল কুদ্দুস: ক্রেতারা যদি আশানুরূপ পণ্য হাতে না পায়, সে ক্ষেত্রে তারা সহজেই দারাজের রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি অনুযায়ী ৭ দিনের মধ্যে পণ্য ফেরত দিয়ে টাকা রিফান্ডের আবেদন করতে পারে। দারাজের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্রাহক যাতে অযথা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ প্রতিদিন: দারাজের ক্যাম্পেইন অফার সম্পর্কে বলুন?   
হাসিনুল কুদ্দুস: মূলত, দারাজের ক্যাম্পেইনে বিক্রেতারা ও বিভিন্ন পার্টনাররা অফার দিয়ে থাকে। বিভিন্ন উৎসব যেমন- নববর্ষ, ঈদ, দারাজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং সবচেয়ে বড় ক্যাম্পেইন ১১.১১- কে ঘিরে ক্রেতাদের ক্রয়ের প্রবণতা অনেক বেশি থাকে, তাই স্বাভাবিকভাবেই বিক্রেতারা ও বিভিন্ন পার্টনাররা এই সুযোগটি কাজে লাগাতে বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকে। ২০২১ সালের ১১.১১ ক্যাম্পেইনে সেবা দেয়ায় আগের সকল রেকর্ড ভেঙেছে দারাজ। বিশ্বের বৃহত্তম এই শপিং ডে-তে অংশগ্রহণ করতে দারাজ বাংলাদেশের অ্যাপে ভিজিট করেছে ২১ লাখ ২৯ হাজার ৩১০ জন।  ক্যাম্পেইন শুরুর ২ ঘণ্টায় প্রায় ১৭০ কোটি  টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর