শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফরিদপুরে পদ্মায় আটকা ১৯ পণ্যবাহী কার্গো

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে পদ্মায় আটকা ১৯ পণ্যবাহী কার্গো

পদ্মা নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে আটকে আছে কার্গো

ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সিঅ্যান্ডবি ঘাটকে ২০১৫ সালে ‘ফরিদপুর নদীবন্দর’ হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এর কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। পদ্মা নদীসংলগ্ন ফরিদপুর সদর উপজেলার উত্তরের সীমানা ডিক্রির চর ইউনিয়নের টেপুরাকান্দি, দক্ষিণের সীমানা আলিয়াবাদ ইউনিয়নের সাদিপুর মৌজা পর্যন্ত নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। নদীবন্দর ঘোষণা হলেও এখনো শুরু হয়নি উন্নয়নকাজ। নদীবন্দরকে ঘিরে উন্নয়নমূলক কাজ হাতে না নেওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়তে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এ বন্দরটি। বর্তমানে পদ্মায় ড্রেজিং না হওয়ায় নাব্য সংকটে পড়েছে ঘাট এলাকা। এতে ঘাটে ভিড়তে পারছে না পণ্যবাহী কার্গো ও বড় বড় ট্রলার। ঘাট থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীতে আটকে আছে ১৯টি পণ্যবাহী কার্গো। আটকে থাকা বাহনের নাবিক ও সহযোগীরা জানান, মাঝারি ধরনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের জন্যে কমপক্ষে ৮ ফুট নাব্য থাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু পদ্মার ওই অংশে কোথাও কোথাও নাব্য রয়েছে ৪ ফুটেরও কম। এতে মালবাহী নৌযান নিয়ে ঘাটে পৌঁছানো যাচ্ছে না। অনেকে আবার সপ্তাহকালের অধিক সময় ধরে এখানে আটকে আছেন। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন নৌযান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এদিকে, এ নৌপথে গম আনয়নকারী শরিফুল ইসলাম ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী হেলালুর রহমান জানান, সময়মতো মাল না আসায় ও আটকে থাকা নৌযান থেকে ছোট ছোট নৌযান ব্যবহার করে পণ্য খালাস করে ঘাটে আনায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। সাবেক পৌর কাউন্সিলর এম এ সালাম লাল মিয়া জানান, সিঅ্যান্ডবি ঘাট ঘিরে রয়েছে ৫-৬ হাজার শ্রমিকের জীবন ও জীবিকা। যাদের একটি বড় অংশ অলস সময় কাটাচ্ছে। শ্রমিকনেতা ও জনপ্রতিনিধিরা মনে করেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে নৌযানে পণ্য পরিবহন কমে যাবে, এতে বেকার হয়ে পড়বে শ্রমিকরা। ঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষের নাফিজুল ইসলাম তাপস জানান, এলজিআরডি মন্ত্রীর প্রচেষ্টচায় সিঅ্যান্ডবি ঘাট ফরিদপুর নদীবন্দরে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন বন্দর থেকে সরাসরি পণ্য আসে ফরিদপুর নদীবন্দরে। আর ফরিদপুর থেকে প্রতিদিন গরু, ধান, পাটসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হয় বিভিন্ন এলাকায় এবং বিভিন্ন বন্দর থেকে সিমেন্ট, বালু, কয়লা, রডসহ অন্তত ৫০ ধরনের পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়। তিনি মনে করেন, নাব্য সংকট দূরীভূত না হলে মালামাল পরিবহন কমে যাবে, কমে যাবে রাজস্ব আদায়।

এ ছাড়া ঘাটের পন্টুনসহ উন্নয়ন না করা হলে ঐতিহ্য হারাবে এ ঘাট। যদিও বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। জরিপ শেষে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য ফিরিয়ে আনতে কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (সার্ভে) আশফাকুর রহমান। চলতি বছরে ফরিদপুর নদীবন্দর ৩৭ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বন্দরের সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে নদীপথে পণ্য পরিবহনে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। বেড়ে যাবে সরকারের রাজস্বও।

সর্বশেষ খবর