রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বিপর্যয়ে চিংড়ি শিল্প

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

বিপর্যয়ে চিংড়ি শিল্প

চলছে চিংড়ির রেণু কেনাবেচা। বাগেরহাটের স্থানীয় বাজার থেকে তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাগেরহাট জেলায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে চিংড়ি শিল্পে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। একদিকে রপ্তানি বন্ধ থাকার কারণে চিংড়ি চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্যমূল্য থেকে। অন্যদিকে চিংড়ি চাষ মৌসুমের শুরুতে ঘের (খামার) পরিচর্যা শেষ করলেও চাহিদা অনুযায়ী পোনা ছাড়তে না পারায় গত বছরের মতো এবারও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার চাষিরা। এ ছাড়া গত ১৪ এপ্রিল থেকে সারা দেশে কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ায় চিংড়ি পোনা পরিবহন ব্যবস্থা অচল থাকায় চিংড়ি পোনা সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণেই গলদা-বাগদার রেণু পোনার দাম বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। অনেকেই  বেশি দামে পোনা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চিংড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত লক্ষাধিক মানুষ। গতকাল সরেজমিনে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চিংড়ি পোনার হাট বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লাহাটে দেখা যায়, প্রতিদিন কোটি টাকার গলদা-বাগদা বেচাকেনা চলা এই হাটে এখন আর নেই আগের মতো কর্মব্যস্ততা। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে পোনা পরিবহনে সংকট দেখা দেওয়ায় শূন্য হাঁড়ি নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে এই আড়তের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের। আড়তদার ও চিংড়ি পোনা গণনাকারী শ্রমিকরা জানান, গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের কারণে অনেকটা বেকার হয়ে পড়েছে এই হাটের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকসহ প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ। অন্যদিকে এমন অবস্থা চলতে থাকলে মৌসুমের শুরুতে চাহিদা অনুযায়ী পোনা সরবারাহ করতে না পারায় জেলার চিংড়ি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করছেন আড়তদারা। ফয়লাহাটের আড়তদার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, চট্টোগ্রাম, ফেনী, নয়োখালী ও কক্সবাজার থেকে বাগদা ও গলদা পোনা আসে এই হাটে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এই হাটে প্রায় কোটি টাকার গলদা-বাগদার পোনা বেচাকেনা হয়। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে হাটে। আগের মতো চিংড়ি পোনার সরবরাহ না থাকায় চাষিদের চাহিদা অনুযায়ী পোনা সরবরাহ করা যাচ্ছে না। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম রাসেল বলেন, করোনা প্রভাবে বর্তমানে রপ্তানি বন্ধ থাকায় বর্তমানে মাছের দাম অনেকটা কমে গেছে। এর ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেলার প্রান্তিক চাষিরা। রপ্তানি বন্ধ থাকায় গত এক বছরে বাগেরহাটের চিংড়ি শিল্পে ক্ষতির পরিমাণ ১৪০ কোটি টাকা আর সব মিলিয়ে এই ক্ষতির পরিমাণ হবে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এরই মধ্যে বাজারে পোনা সংকটও দেখা দিয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর