বগুড়ায় প্রতিদিনই পুলিশের অভিযানে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত এক মাসে জেলায় প্রায় ৪৮ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও ২৮৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ বলছে, মাদকের ঘটনায় অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে আবারও আগের পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। সেক্ষেত্রে কৌশল বদলাচ্ছে অনেকে। এ কারণে অব্যাহত অভিযানের পরও মাদক বিক্রেতাদের থামানো যাচ্ছে না। জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে ৬৮ কেজি ৪৪০ গ্রাম গাঁজা, ৪২৯ বোতল ফেনসিডিল, ১২৪ দশমিক ৫ গ্রাম হেরোইন, ৫ হাজার ৭২২ পিস ইয়াবা, ১১০ লিটার চোলাই মদ, ৩৫৯ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট এবং ২ হাজার ৮৬৭ পিস এম্পুল জব্দ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৪৭ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯০ টাকা। এ ঘটনায় ২০৪ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ২৮৫ জনকে। গ্রেফতাররা সবাই দীর্ঘদিন ধরে মাদকের সঙ্গে জড়িত। তারা নানা কৌশলে মাদক বিক্রি করে আসছে। জেলা পুলিশ বিভাগ বলছে, যাত্রীবাহী বাস, কভার্ড ভ্যান, প্রাইভেট কার, ট্রাকে করে মাদক পাচার করা হচ্ছে। বগুড়া সীমানা পার হলে তারা ঢাকায় অধিকমূল্যে মাদক বিক্রি করতে পারছে। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে কেউ কেউ মাদক ব্যবসায় জড়াচ্ছে। পুলিশ বিভাগ থেকে ঢাকা-বগুড়া সড়কে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, জেলায় সবচেয়ে বেশি মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে সদর থানা এলাকায়। শহরের জহুরুল নগর, পুরান বগুড়া, তিনমাথা, চারমাথা, খান্দার, ফুলতলা, ফুলদিঘি, সেউজগাড়ী, মালগ্রাম, চেলোপাড়া, হাকিড় মোড়, সুলতানগঞ্জ পাড়া, চক সূত্রাপুর, বাদুরতলা, হাড্ডিপট্টি এলাকায় হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যায়। শহরের এক নম্বর রেলঘুমটির পুব দিকে বাংলামদ বিক্রি হয়। সেখানে কয়েকজন যুবক প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাংলা মদ কেনাবেচা করে। সূত্র জানায়, সদর এলাকায় দুই শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে যাদের ৩০-৪০ শতাংশই নারী। কৌশল পরিবর্তন করে এখন বিক্রেতারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য সেবীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। মাদক বিক্রেতা এ জন্য নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। সম্প্রতি জেলা পুলিশ বিভাগ থেকে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ তালিকা ধরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে। তারপরও থেমে নেই মাদক বিক্রি। মাদক জেলার অনেক যুবককে নানা অপকর্মে জড়িয়ে ফেলছে।
মাদক সেবনের টাকার জন্য অসামাজিক কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ। সদর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, মাদক ব্যবসায়ীরা যতই কৌশল অবলম্বন করুক না কেন তাদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, বগুড়ায় মাদক নির্মূলে জেলা পুলিশ সব সময় কঠোর। মাদকদ্রব্য কোথা থেকে আসছে আমরা এখন সে উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে জেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হয়েছে। তালিকা ধরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
