বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঠান্ডায় পাহাড়ে বাড়ছে রোগী হাসপাতালে শয্যা সংকট

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

ঠান্ডায় পাহাড়ে বাড়ছে রোগী হাসপাতালে শয্যা সংকট

রাঙামাটিতে দ্রুত বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। জেলা সদরের চেয়ে এ রোগের প্রকোপ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি পাহাড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়া। শিশুদের পাশাপাশি বয়ষ্করাও আক্রান্ত হচ্ছেন এসব রোগে। এতে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। তাই স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসা দিতে অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা কয়েক গুণ। ১০০ শয্যার রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ৫০ শয্যা ভবনে রোগী ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন ১৫০-২০০ জন। তাই শয্যা সংকটে পড়েছে রোগীরা। বাধ্য হয়ে অনেক রোগীকে রাখা হচ্ছে মেঝেতেও। অন্যদিকে হাসপাতালে জনবল সংকট থাকায় অধিক রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের। রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলা থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়া নিয়ে শিশু সন্তান সঞ্চনা চাকমাকে নিয়ে চার দিন ধরে ভর্র্তি আছেন মা অঞ্জনা চাকমা। তিনি বলেন, সম্প্রতি তীব্রভাবে অনুভব হচ্ছে পাহাড়ে শীত। এ জন্য যেমন বয়ষ্কদের শ্বাস কষ্ট বেড়েছে, তেমনি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। আমার সন্তানের জ¦র কিছুতেই কমছিল না। তবে চিকিৎসা নেওয়ার পর এখন মোটামুটি সুস্থ আছে। একই কথা জানালেন, মা নিয়ে আসা রেনেসা চাকমাও। তিনি বলেন, ঠান্ডার কারণে তার মার হাত পা ফুলে গেছে। একই সঙ্গে শ্বাসকষ্টও বেড়েছে। রোগী বেশি, হাসপাতালে তাই বাধ্য হয়ে মেঝেতে শয্যা করতে হয়েছে।  রাঙামাটি আরএমও ডা. সওকত আকবর বলেন, রোগী বেশি। তবে চিকিৎসার কমতি নেই। তাই মৃত্যুও নেই। আমরা চেষ্টা করছি যথাযথ চিকিৎসা দিতে। তবে পর্যাপ্ত শয্যা, ওষুধ আর জনবল সংকটের কারণে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে রাঙামাটি ৯টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। আবার অনেকে একটু উন্নত চিকিৎসার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালমুখী হচ্ছে। তাই ভিড় বাড়ছে শহরের জেনারেল হাসপাতালে। রাঙামাটি সিভিল সার্জেন বিপাশ খীসা জানান, রাঙামাটি উপজেলাগুলো খুবই দুর্গম। সেখানে জেলা সদরের চেয়ে শীতের প্রকোপ বেশি অনুভূত হয়। এ ছাড়া সেখানে যেসব জনগোষ্ঠী রয়েছে তারা ও তেমন সচেতন না। তাই ঠান্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে যারা হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা ছাড়া কেউ ফিরে যাচ্ছে না। তাই মৃত্যু সংখ্যা একেবারে নেই। তবে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা কমে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর