গাইবান্ধায় চলতি বোরো (ইরি) মৌসুমে ধানে উপকারী ও অপকারী পোকার উপস্থিতি শনাক্তকরণের জন্য আলোকফাঁদ ব্যবহার দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে। কৃষিজমির পাশে স্থাপন করলে উপকারী ও অপকারী পোকাগুলো বাল্বের আলোতে আকৃষ্ট হয়ে এই ফাঁদে আটকা পড়ে মারা যায়। এর মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব হয় এবং পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ২৭২ হেক্টর। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ২১ হাজার ২৯৬ হেক্টর। এ মৌসুমে ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-২৯, ব্রিধান-৫০, ব্রিধান-৫৮, ব্রিধান-৮৮, এলপি-৭০, সুবর্ণ-৪, হারা-২, হীরা-১২, এরাইজ গোল্ডসহ আরও নানা জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে বোরো (ইরি) ধানের জমিতে পোকার উপস্থিতি শনাক্তকরণে আলোকফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে। ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকরা এসব আলোকফাঁদ স্থাপন করেছেন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী বলেন, আলোকফাঁদ স্থাপন করে ক্ষতিকর পোকামাকড় চিহ্নিতকরণসহ পোকা দমনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিকর পোকা দমনে এ পদ্ধতিটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার শাহাদৎ হোসেন বলেন, মূলত আলোকফাঁদ একটি পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম। এটি তৈরিতে বৈদ্যুতিক বাল্ব, এসি-ডিসি বাল্ব বা চার্জার বাল্ব ব্যবহার করা হয়।
ধানখেত থেকে ১০০ মিটার দূরে বাঁশ বা কাঠের খুঁটির সাহায্যে মাটি থেকে ২-৩ ফুট ওপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে এর নিচে একটি পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রেখে ফাঁদটি তৈরি করা হয়। এই ফাঁদের আলোয় আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন পোকামাকড় এসে পাত্রের পানিতে পড়ে, ফলে মাঠে উপকারী বা অপকারী পোকার প্রাদুর্ভাব বা উপস্থিতি বোঝা যায়। কৃষকদের ফসল রক্ষার্থে আলোকফাঁদ স্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন বালাইনাশকের ব্যবহার হ্রাস পাবে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে, অন্যদিকে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমে আসবে।
