বুধবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বুধবার থেকে গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৬০ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা আবহাওয়া অফিস। স্থানীরা জানান, পানিতে তলিয়ে গ্রামীণ সড়কগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে। সিএনজি, অটোরিকশা দূরের কথা মোটরসাইকেলও চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন এবং দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন পথচারী ও পরিবহন চালকরা। সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তির শেষ নেই। জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণ, জজকোর্ট সড়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়ক, জেলা জামে মসজিদ সড়ক, হাউজিং এস্টেট, বালুল মাঠ, মাস্টারপাড়া, খোন্দকারপাড়া, মধুসূদনপুর, লক্ষ্মীনারায়ণপুরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিস, আবাসিক এলাকা ও সড়কে পানি জমে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নোয়াখালী পৌরসভার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সমস্যা দেখা দেয়। জেলা আওহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে দেশের সর্বোচ্চ ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনও বৃষ্টি হতে পারে। জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, আমরা জলাবদ্ধতার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।
এদিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একটানা বৃষ্টিতে জনজীবনে নেমেছে স্থবিরতা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সব শ্রেণি পেশার মানুষ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন শ্রমজীবীরা। টানা বৃষ্টিতে নিচু স্থানে পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। তলিয়ে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। ভেসে গেছে এসব ঘের ও পুকুরের মাছ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্য চাষিরা। গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত কলাপাড়ায় সর্বোচ্চ ১৩৪.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। অতিভারী বৃষ্টির সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পায়রাসহ সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব মাছধরা ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
শ্রমজীবী আল আমিন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টির কারণে কেউ কাজ করাতে চায় না। এভাবে চলতে থাকলে সংসার চালানো দায় হয়ে যাবে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী সাংবাদিকদের জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টা অতিভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় বজ্রবৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।