নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। যা দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হন দুই জেলার তিন ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চরখোর্দ্দা গ্রামের পাশে বুড়াইল নদীতে এই সাঁকো পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ পর্যন্ত এ সাঁকো থেকে পড়ে দুজন নিহতও হয়েছেন। রোগীদের হাসপাতালে আনা-নেওয়ার সময় বিপাকে পড়তে হয় স্বজনদের।
স্থানীয়রা জানান, এখানে বুড়াইল নদীর এক পাশে গাইবান্ধা অন্য পাশে কুড়িগ্রাম জেলা। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ ২৭ গ্রামের ১৫ থেকে ২০ হাজার লোকের চলাচল। দীর্ঘদিন ধরে এখানে সেতু নির্মাণের শুধুই আশ্বাস দিয়ে যান জনপ্রতিনিধিরা। ৩০ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তারা বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের সংযোগ স্থাপন করেছে এ সাঁকো। এ পথ দিয়ে দুই জেলার তিন ইউনিয়নবাসী ছাড়াও গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের অন্য উপজেলার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণিপেশার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। বয়োজ্যেষ্ঠরা জানান, এক সময় বুড়াইল নদী প্রসস্ত কম ছিল। এখানে কখনো বাঁশের সাঁকো, কখনো কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করত দুই পারের মানুষ। বুড়াইলের পাশ দিয়ে ছিল তিস্তা নদী। পর্যায়ক্রমে তিস্তা ভেঙে বুড়াইলে সংযোগ হয়। সেই থেকে এ নদীতে বেড়ে যায় পানির প্রবাহ। ভাঙনের ফলে বাড়তে থাকে নদীর প্রসস্তও। তখন থেকে তিস্তার শাখা নদী হিসেবে পরিচিতি পায় এটি। পথচারী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সাঁকো ভাঙলে আর নদীতে পানি বাড়লে সাংবাদিক আসেন। ছবি তোলেন, ভিডিও করেন। আর হামারগুলার বক্তব্য নেন। ব্রিজ তো হয় না। এখন হামরা সাংবাদিকদের ওপরও বিরক্ত।’ সোলেমান মিয়া বলেন, এ পথ দিয়ে চলাফেরা করে তারাপুর এবং পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের ২৭ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার লোকের চলাচল। তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, সয়েল টেস্ট হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সেতুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু করা হবে।