আবারো ময়মনসিংহের ভালুকায় দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক 'বাংলাদেশ প্রতিদিন' ঢুকতে দেয়নি সরকার দলীয় স্থানীয় এমপি ডা. এম. আমান উল্লাহর ক্যাডাররা। তাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে স্থানীয় পাঠকরা আবারও বাংলাদেশ প্রতিদিন পাঠ করা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে করে ক্ষোভের অনলে ফুঁসতেও দেখা গেছে কোনো কোনো পাঠককে।
এদিকে, ‘ভালুকায় এমপি আমান উল্লাহ পরিবারের শাসনে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিদিন’ শিরোনামে মঙ্গলবার প্রকাশিত সংবাদটি হয়ে উঠে ‘টক অব দ্যা ময়মনসিংহ।’ পত্রিকা না পেয়ে অনেকেই বাংলাদেশ প্রতিদিনের ওয়েবসাইট থেকে নিউজটি প্রিন্ট করেছেন। প্রিন্ট কপি থেকে আবার ফটোকপি করারও ধুম পড়ে যায়। কেউ কেউ আবার ময়মনসিংহ শহর থেকেও পত্রিকাটি সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এ নিউজটি নিয়ে ছিল মাতামাতি। নিজেদের কুকীর্তি পুনরায় জনসম্মুখে চলে আসায় অসন্তুষ্ট এমপি ও তার পাবিরারিক লোকজন।
স্থানীয় সংবাদপত্র এজেন্ট বাচ্চু মিয়া জানান, বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসের সঙ্গে কথা বলে আগামীকাল বুধবার থেকে ভালুকায় নিয়মিত বাংলাদেশ প্রতিদিন আনা হবে। এ ধরণের সবুজ সংকেত তিনি পেয়েছেন বলেও জানান।
এসব বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা: এম আমান উল্লাহ’র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ভালুকায় বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রবেশে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তার পারিবারিক ক্যাডারদের বাধার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদকে সোমবার জানালেও তিনি এখন পর্যন্ত নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে পুনরায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে এখনো লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর ভালুকা পৌরসভা নির্বাচনের হালচাল সম্পর্কে ‘নৌকার বিপক্ষে আওয়ামী লীগের এমপি’ শিরোনামে সরেজমিনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ প্রতিদিনে। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ডা. এম আমান উল্লাহ ও তার ক্যাডাররা। ইতোপূর্বেও তার গুণধর ভাতিজাদের নিয়ে এই দৈনিকটিতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, দখলবাজি’র চিত্র উঠে আসায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল গোটা উপজেলায়। সেই থেকেই বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতি নাখোশ ছিলেন এমপি আমান উল্লাহ। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে তার ভাতিজা লুৎফেওয়ালী রব্বানী, রওনক শিহাব রব্বানী, রেদেয়োন সারোয়ার রব্বানী, শিপন মাস্টার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহবায়ক সাদেকুর রহমান তালুকদারের নেতৃত্বে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনকে মিথ্যা দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কয়েকশ’ কপিতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং ভালুকায় বাংলাদেশ প্রতিদিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব