ভরা বর্ষায় কলার ভেলায় চড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় দিনই অজুর্নপুর ঘাট দিয়ে করতোয়া নদী পারাপার হতো বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে শিক্ষার্থীই রয়েছে পাঁচ শতাধিক।
গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে করতোয়া নদী ফুলে ফেঁপে রুদ্রমুর্তি ধারণ করেছে। দু'কূল ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করেছে ঘরের দুয়ারে। বেড়েছে নদীর প্রশস্ততা। তাতে করে কলা গাছের ভেলায় চড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে ওঠে বিপদজনক।
এতো বিপুল সংখ্যক মানুষের দুর্ভোগ দেখে শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক শনিবার অজুর্নপুর গ্রামবাসীর পারাপারের জন্য একটি নৌকা তৈরি করে দিয়েছেন। প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত নৌকাটি নদীতে ভাসানো হলে শত শত মানুষ আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে। বর্তমানে সেই নৌকায় চড়ে শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসীরা এখন নদী পারাপার হচ্ছে।
অর্জুনপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জানান, নৌকা পেয়ে গ্রামের অসংখ্য নারী-পুরুষ শিশুরা খুশি হয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও অর্জুনপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক বিপুল জানান, অর্জুনপুরের করতোয়া নদী ঘাট দিয়ে উপজেলার অর্জুনপুর, ছয়ঘরিয়াপাড়া, চুনিপাড়া, পাইকপাড়া, বাগমারা, মণ্ডলপাড়া, উথলী, বেড়াবালা, আকন্দপাড়া, গরীবপুরসহ ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ উপজেলা সদরে নানা কাজে যাতায়াত করে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫শ' এরও বেশি।
শিবগঞ্জ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোমিনুল ইসলাম মোমিন বলেন, এর আগে এ ঘাটে নৌকাডুবিতে এক শিশু নিহত হয়। তারপর থেকেই নৌকাটি হারিয়ে যায়। তখন থেকেই নদী পারাপারে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। মেয়রের কল্যাণে সেই দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে এলাকাবাসীর।
শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা তৌহিদুর রহমান মানিক বলেন, করতোয়া নদীর অর্জনপুর ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ করা দরকার। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হবে কমপক্ষে সোয়া তিন কোটি টাকা। যা পৌরসভার তহবিল থেকে কুলাবে না। এজন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সাহায্য-সহযোগিতা প্রয়োজন। এজন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে এলজিইডির সহযোগিতায় সেতুটি নির্মাণ করা যায়।
বিডি প্রতিদিন/ ৩০ জুলাই ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন