শেরপুরে এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষনের ঘটনায় তিন ধর্ষকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রবিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেলা ও দায়রা জজ কিরণ শংকর হালদার এ সাজার রায় ষোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলো- শহরের শেখ হাটি এলাকার চাঁন মিয়া (৩৫), নজু শেখ (২৭) ও মো. শামীম মিয়া (২২)।
রায়ে সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় যাবজ্জীবন সাজা ও ৫০ হজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় প্রত্যেককে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় মো. ইয়াকুব আলী ও রসুল মিয়া নামে দু'জনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার কালাপাগলা গ্রামের বাসিন্দা এক চাল ব্যবসায়ীর মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়। ওই কলেজ ছাত্রী শেরপুর শহরের শেখহাটি মহল্লায় বোনের সাথে ভাড়া বাড়িতে থেকে নাগপাড়া এলাকার বিজ্ঞান কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছিলেন। ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই রাত নয়টার দিয়ে ইজিবাইকে বাসায় ফেরার পথে শহরের নারায়ণপুর এলাকার এটিআই মোড় থেকে কতিপয় দুর্বৃত্ত ওই কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে গাজীরখামার এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে রাতভর গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ওই কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শেরপর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল করিম শেখ হাটি এলাকার চাঁন মিয়া, নজু শেখ, মো. শামীম মিয়া, মো. ইয়াকুব আলী ও রসুল মিয়া নামে পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আদালত ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রবিবার চাঁন মিয়া, নজু শেখ, মো. শামীম মিয়াকে পৃথক দু'টি ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন এবং মো. ইয়াকুব আলী ও রসুল মিয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, আসামিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার একপর্যায়ে তারা বাদী পক্ষকে মামলাটি আপোসে বাধ্য করলেও আদালত ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ সাজার রায় ঘোষণা করেছেন। এ রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
অপরদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল মানসুর স্বপন বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ