উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দ্বীপ জেলা ভোলার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বাঁধের ভেতর ও বাইরের ৩০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। বন্যায় পুকুর ঘের, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা ও রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়ে গেছে। নতুন করে বাঁধ নির্মাণ ও ভাঙা বাঁধ মেরামত না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ বানবাসীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদিকে ভাঙন আর অন্যদিকে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে ভোলা সদর, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার ৩০ গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন পানির নিচে। ফলে এসব গ্রামের মানুষদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার উপায় নেই। আবারও বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করায় গৃহবন্দি হয়ে পড়া এসব মানুষরা রান্না-বান্নাও করতে পারছেন না। সেখানে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনেকে আবার ঘর-বাড়ি থেকে বাঁচার আশায় খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতন জীবনযাপন করছেন।
রাজাপুর গ্রামের বন্যা কবলিত মিনারা বেগম জানান, ''এক খানি জমি নদীতে নিয়া গেছে, এখন আবার জোয়ারে পুরো গ্রাম তলিয়ে গেছে। ২ ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোনো রকমে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি।''
স্কুলছাত্রী তানিয়া বলেন, ''পানিতে স্কুল তলিয়ে গেছে, স্কুলে যেতে পারছি না, সামনে পরীক্ষা আমাদের পড়াশুনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।''
সুলতানা, রাজিয়া ও রোকেয়া নামের তিন গৃহবধূ বলেন, ''২ দিন ধরে চুলা জ্বালাতে পারিনি, পরিবারের সবাই না খেয়ে আছি। সময় থাকতে বাঁধ মেরামত করলে আমাদের এভাবে কষ্ট পেতে হতো না।''
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদ রান্না বলেন, ''ইলিশা ও রাজাপুর ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে, পাউবোর একটি বাঁধ নির্মাণের কথা থাকলেও আজো তা করা হয়নি।''
এদিকে, প্লাবিত এলাকার মানুষ কেউ কেউ উঁচু স্থানে আশ্রয় নিলেও অনেকেই ঘর-ভিটা হারিয়ে আশ্রয় নেওয়ার স্থান টুকুও পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ইউনুস বলেন, উজানের পানিতে নিচু এবং ভেঙে যাওয়া বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে, দ্রুত বাঁধ মেরামতের কাজ করছি, খুব শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/০২ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব