কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে তা প্রতিহত করে মিয়ানমারের ৭৮ রোহিঙ্গা নাগরিককে স্বদেশে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার ভোরে টেকনাফের উনচিপ্রাং, হ্নীলা, দমদমিয়াসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।
মিয়ানমারে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে গত কয়েকদিনে প্রায় দুই শতাধিক মিয়ানমার নারী, পুরুষ ও শিশুকে নাফনদীতে প্রতিহত করে স্বদেশে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। তবে সীমান্তে অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাছাড়া সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে মাছ ধরা ও চলাচলে সীমাবদ্ধতা বজায় রাখতে স্থানীয় ও জেলেদের সচেতন করা হচ্ছে।
২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে: কনের্ল মোঃ আবু জার আল জাহিদ জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের উনচিপ্রাং, হ্নীলা ও দমদমিয়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বিজিবির টহলদল নাফ নদীর সীমান্তে প্রতিহত করে ৭৮ মিয়ানমার নাগরিককে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী ও ৩০ জন শিশু ছিল।
তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নাফ নদী অতিক্রম করে নৌকা যোগে মিয়ানমারের ৭৮ নাগরিক অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে প্রতিহত করে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। গত কয়েকদিনে বিজিবি সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টা কালে প্রায় দুই শতাধিক নাগরিককে প্রতিহত করে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। সীমান্তে এ বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমার ১ হাজার ৬৮৮ নাগরিককে আটক করে স্বদেশের ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে অবৈধ অনুপ্রবেশ আগের তুলনায় অনেকটা কম। সীমান্তের পরিস্থিতি এখনো অনেকটা শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে বিজিবির পক্ষ থেকে টেকনাফ সীমান্তের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মিয়ানমারে চলমান সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনার প্রেক্ষিতে নাফ নদীতে মাছ ধরা ও চলাচলে সীমাবদ্ধতা বজায় রাখা হয়েছে। এছাড়া নদীতে মাছ শিকারে শূণ্য রেখা অতিক্রম না করা এবং রাতে মাছ শিকার না করে দিনে শিকার করার কথা বলা হয়েছে।
পাশাপাশি দেশীয় জলসীমায় বিজিবি থাকাকালীন জেলেরা মাছ শিকারে কোন দুর্ঘটনার শিকার হলে তা বিজিবির কাছে জবাবদিহি করতে হবে। কোন দুর্ঘটনা বা জেলের কাছে কোন অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘটনা দেখা গেলে বিজিবিকে অবগত করতে হবে। তবে মিয়ানমার নাগরিকরা যাতে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১৮ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল