গাইবান্ধা-১(সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ২৫ দিন পরেও হত্যা রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়ে নিহতের পরিবার।
এমপি লিটনের পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এমপি লিটনের বড় বোন আফরোজা বারী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত হত্যার কুশীলবরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। আমরা তদন্তের কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখছি না। আমাদের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে খুনি দিয়ে লিটনকে হত্যা করা হয়েছে। অবশ্যই এই হত্যকাণ্ডের পেছনে পৃষ্ঠপোষক, মদদদাতা, অর্থযোগানদাতা হিসেবে কোন ব্যক্তি, দল বা প্রতিষ্ঠান ও আদর্শিক অপশক্তি রয়েছে।
আফরোজা বারী প্রশ্ন রাখেন, বাড়ি হচ্ছে সবার নিরাপদ জায়গা, অথচ খুনিরা সেই বাড়িকেই হত্যাকাণ্ডের জন্য নিরাপদ জায়গা হিসেবে বেছে নিল কেন? কিভাবে খুনিরা পরিচয় না দিয়েই ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ার সুযোগ পেল? তাছাড়া লিটনের অতন্দ্র প্রহরী জার্মান শেফার্ড কুকুর দুটি ওই সময়ে কোথায় ছিল? দুর্বৃত্তরা রিভলবারের ৫টি গুলি করার পরও কেন তার নিকটজনরা লিটনের কাছে এলো না? লিটন গুলিবিদ্ধ হবার পর কাউকে কাছে না পেয়ে তাকে দৌড়ে বাড়ির ভেতরে আঙ্গিনার দিকে ছুটে যেতে হলো কেন?
প্রশ্ন ছুড়ে তিনি আরও বলেন, কেন লিটনের ঘনিষ্ঠজন, দলীয় নিবেদিত নেতাকর্মী এবং সহযোদ্ধারা কেউই তার পাশে ছিল না, তাদের কি দূরে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল? গুলিবিদ্ধ হবার পর লিটন প্রায় এক ঘণ্টা জীবিত ছিল, কিন্তু তখন কেন খুনিদের পরিচয়ের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উঠল না?
আফরোজা বারী বলেন, লিটন হত্যার আগে পরের এই ঘটনাগুলো আমাদের বিচলিত করেছে। এসব প্রশ্নের উত্তর পেলে আমরা অনেকটা আশ্বস্ত হবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলা সিআইডির কাছে দেব কিনা সে বিষয়ে এখনও কিছু ভাবিনি। তবে আমরা এখনও হতাশ নই। প্রধানমন্ত্রী হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি দেখছেন। কাকে দিয়ে তদন্ত করতে হবে তিনিই ঠিক করবেন। এ ব্যাপারে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। আমরা আশায় বুক বেঁধে আছি। শীঘ্রই প্রকৃত খুনিদের মুখোশ উন্মোচিত হবে বলে আমরা মনে করি।
এমপি লিটনের শূন্য আসনে উপনির্বাচনের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী বলেন, এই মুহূর্তে নির্বাচন নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক তা দেখতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের মামলার বাদী লিটনের চাচাতো ভাই তৌফিকুর রহমান, ফুফাতো ভাই আনিসুর রহমান, ভাগ্নি মেহের নিগার ও চাচাতো বোন শিবলী আকতার প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব