কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারও লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। ফাল্গুনের শুরুতে গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ আর মৌ মৌ গন্ধ। দেশ সেরা মানে দিনাজপুরের লিচু। মিষ্টি ও রসালো স্বাদ আর বৈশিষ্ট নিয়ে বিভিন্ন জাতের এ লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি আর দেশী লিচুর মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে গাছের ডালপালা।
লিচু বাগানগুলোতে যেদিকে চোখ যায় শুধু মুকুলের সমারোহ। সদরের মাসিমপুর, কসবা, বাশেরহাট, পুলহাট, বিরল, পাচবাড়িসহ দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় এবার লিচু গাছের ডালে ডালে প্রচুর মুকুল এসেছে। গাছে গাছে শতকরা ৪০ ভাগ মুকুল এসে গেছে। লিচু গাছে মুকুল দেখে বাগান বিক্রি করে এবারও লাভবান হবেন বলে আশাবাদী মালিকরা। সাধারণত বৈশাখ মাসে লিচু পাকা শুরু হয় এবং বাজারে পাওয়া যায়। এরই মধ্যে লিচু বাগান নিয়ে বেচা-কেনা শুরু হয়েছে।
২০০৯ সালে দিনাজপুরে লিচু চাষের জমির পরিমান ছিল ১ হাজার ৫শ' হেক্টর। বর্তমানে এটা বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৪ হাজার ৭শ' ৭০ হেক্টর। দিন দিন লিচুর ফলন এবং দাম ভাল পাওয়ায় এ চাষের জমি বাড়ছেই।
পুলহাট-মাসিমপুরের আসাদুজ্জামান লিটন জানান, দিনাজপুরের দক্ষিণ কোতয়ালী ও মাসিমপুরসহ আশেপাশে কিছু এলাকায় ভিটা, জমি, বশতবাড়ী এবং ডাঙ্গা জমিতে লাগানো গাছই ছিল, লিচু আবাদ ছিল সীমিত। কিন্তু এখন এর বিস্তার ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিরলের সফিকুল ইসলাম জানান, একটি বড় গাছে ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত এবং সবচেয়ে ছোট গাছে ১ থেকে দেড় হাজার লিচু পাওয়া যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, দিনাজপুর জেলায় ৪৭৭০ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় নিয়ে প্রায় ৫ হাজার ৪১৮টি লিচুর বাগান রয়েছে। বাগান ছাড়াও কিছু সংখ্যক বাড়ী, বাড়ী সংলগ্ন ভিটা জমিতে ২/৪টি করে লিচু গাছ রয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়।
বিরল কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, প্রকৃতি এবং আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এবারও দিনাজপুরে ফলন হবে বাম্পার। গাছে গাছে শতকরা ৪০ ভাগ মুকুল এসে গেছে। এক দশকে যাবত অবিশ্বাস্য গতিতে বৃহত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় লিচুর চাষাবাদ বাড়ছে। জেলা সদরসহ কাহারোল, বিরল, চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জ প্রভৃতি উপজেলায় এই ফলের চাষাবাদ বাড়ছে।
চিরিরবন্দর কৃষি কর্মকর্তা সুধেন্দ্রনাথ রায় জানান, এবারও দিনাজপুরে লিচুর ফলন ভাল হবে। লিচু চাষে চৈত্র মৌসুমে পর্যাপ্ত সেচের প্রয়োজন হয়।
বিডি প্রতিদিন/১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/হিমেল