বান্দরবানের লামার দূর্গম নাইক্ষ্যংমুখ এলাকায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার বিকালে সেনাবাহিনীর সাথে জেএসএস সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনায় বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক থাকলেও চরম আতংক বিরাজ করছে স্থানীয় জন-সাধারনের মাঝে। ইতিমধ্যে আতংকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ২০টি উপজাতি ও ৭টি বাঙ্গালী পাড়ার কয়েক হাজার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে অবস্থিত ১৯টি দোকান ঘটনার পর থেকে বন্ধ রয়েছে। এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে কয়েকশত তামাক চাষী। প্রতিটি উপজাতি পাড়ায় রাতে নির্ঘুম থেকে পাহাড়া দিচ্ছে এলাকাবাসী। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে বাঙ্গালী পাড়া গুলোতেও।
স্থানীয়দের থেকে জানা গেছে, সপ্তাহের প্রতি বুধবার নাইক্ষ্যংমুখ বাজারে হাট বসে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে হাট বসেনি এবং সেই থেকে দোকান গুলো বন্ধ আছে। হাঁটবারে এলাকার মানুষ নাইক্ষ্যং মুখ বাজারে কলা, হলুদ, ধান, আদা, ফুলের ঝাড়ু, গাছ, বাশঁ, তরি-তরকারী, গরু, ছাগর, হাঁস, মুরগি বিক্রি করতে আসে। এই বিক্রির টাকা দিয়ে চলে তাদের সংসার। এইভাবে চলতে থাকলে অচিরেই দূর্গম এই এলাকার মানুষ গুলো অর্থ কষ্ট সহ খাবারের ভোগান্তিতে পড়বে। অপরদিকে আতংক ও ভয়ে লামা, চকরিয়া ও লোহাগাড়া এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী যাচ্ছেনা উপরে। এতে করে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পেয়ে অর্থ কষ্টে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক তামাক চাষী বলেন, "আমি ৫ একর জমিতে ঋণ করে তামাক চাষ করেছি। এখন তামাক তোলার সময়। কিন্তু আমরা আতংকে উপরে যেতে পারছিনা। এদিকে আমার জমিনের তামাক গুলো নষ্ট হচ্ছে। কিভাবে নিজের পরিবার চালাব এবং কোম্পানী সহ অন্যান্য ঋণ কিভাবে পরিশোধ করব। আমার মত অন্তত ৩ শতাধিক তামাক চাষী জীবনের ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। পূর্বের পরিস্থিতি ফিরে না এলে শুধু তামাক চাষীদের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ দাঁড়াবে ১০ কোটির টাকার উপরে।"
রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রস্ন মার্মা বলেন, "স্থানীয় জনগণ অনেকে ভয়ে এলাকা ছেড়েছে। এখনও উক্ত এলাকার মানুষের মনে আতংক বিরাজ করছে।"
এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেনা টহল নিয়মিত আছে এবং সামনেও সেনা টহল অব্যাহত থাকবে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছে সেনাবাহিনী।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৭