৩১ বছর আগে ধর্ষণের কারণে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়েন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামের এক নারী। পরে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। ধর্ষণকারী একই গ্রামের আজিজুর রহমান ওরফে পচা হুজুর।
১৯৮৬ সালে ওই ঘটনায় ঘটলেও তিনি এ নিয়ে কোনো মামলা করেননি। গতকাল বৃহস্পতিবার স্ত্রীর মর্যাদা এবং সন্তানের পিতৃপরিচয় দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ১ আদালতে এ মামলাটি করা হয়।
আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অঠিসার রফিকুল হাসানকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে ওই নারী প্রতিবেশী সামছুদ্দিন বিশ্বাসের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। ওই বাড়িতে কাজ করার সময় গৃহকর্তার ছেলে আজিজুর রহমান (সে সময় ২০-২১ বছর বয়স) তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে আজিজুর রহমান গৃহপরিচারিকার ঘরে ঢুকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারীরিকভাবে মেলামেশার চেষ্টা করেন। এতে রাজি না হলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। লোকলজ্জার ভয়ে তিনি ঘটনাটি তখন কাউকে বলেননি।
ধর্ষণের কারণে ওই গৃহপরিচারিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। অভিযুক্ত আজিজুর রহমান গর্ভপাত ঘটানোর জন্য তাকে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু ওই নারী তা করেননি। অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় এলকাবাসীর চাপে আজিজুর কাজী ডেকে বিয়ে করলেও স্ত্রীর মর্যাদা দেননি।
ধর্ষণের শিকার গৃহপরিচারিকা ১৯৮৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। সামাজিক চাপে তাকে কিছু জমি দেয়া হয়। সেই মেয়ের বয়স ১৮ বছর হলে ওই জমি বিক্রি করে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। গত বছর জন্মের ঠিক নাই বলে তাকে তালাক দিয়ে দুই সন্তানসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন স্বামী।
চলতি বছরে বাদী ও তার মেয়ে চুয়াডাঙ্গার মানবাধিকার সংগঠন মানবতার কাছে আইনি সহায়তা চান। সংগঠনটির কাছে আজিজুর রহমান বাদীকে স্ত্রীর মর্যাদা এবং তার কন্যাকে সন্তানের স্বীকৃতি দেবেন বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। ১ অক্টোবর দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।
বিডি প্রতিদিন/৭ অক্টোবর, ২০১৭/ফারজানা