টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের জেষ্ঠতা তালিকা প্রণয়ন ও টাইমস্কেল প্রদানে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, নব্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি বিধিমালা ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে বেশি। রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের চাকরি ( নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃংখলা ও কল্যান) নীতিমালা ২০০৯ অনুসারে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান। পরে ২০১৩ সালে তারা জাতীয়করনের আওতাভুক্ত হন। সরকারি বিধিমালা অনুসরন করলে নব্য জাতীয়করনকৃত বিদ্যালয়ের কোন প্রধান শিক্ষকই এখন পর্যন্ত টাইমস্কেল পাওয়ার উপযুক্ত হননি। কারন চাকুরির মেয়াদ ৮, ১২ ও ১৫ বছর পূর্ন না হলে কোন শিক্ষকই প্রথম, ২য়, ও তৃতীয় টাইমস্কেলের উপযুক্ত হবেন না। অথচ ঘাটাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস নব্য জাতীয়করনকৃত ২৭টি বিদ্যালয়ের প্রায় সকল প্রধান শিক্ষককেই টাইমস্কেল প্রদান করেছেন। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা বিধি ভঙ্গ করে এই টাইমস্কেল প্রদান করেছেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ঘাটাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. সুজাত আলী খান ২০১১ সালে রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করে দুটি টাইমস্কেল প্রাপ্ত হয়েছেন। অথচ অর্থ মন্ত্রনালয়ের পত্র মোতাবেক ১৪/০৭/ ২০০৮ তারিখ হতে পদোন্নতির তারিখের পূর্বদিন পর্যন্ত চাকরিকাল গননা যোগ্য হবে না। একই ভাবে শুকনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা পারভীন ১টি মাইধার চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান ৩টি শালিয়াবহ চৌরাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম ২টি টাইম স্কেল প্রাপ্ত হয়েছেন।
অভিযোগে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্য প্রেরিত জেষ্ঠতা তালিকা প্রনয়নেও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা। ঘাটাইল উপজেলায় বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টিতেই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে পদোন্নতি যোগ্য বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৫টি অথচ উপজেলা শিক্ষা অফিস ৪৩টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য দেখিয়ে তালিকা প্রেরন করেছেন। রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগনের চাকরি (নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃংখলা ও কল্যান) নীতিমালা ২০০৯ অনুসারে তারা প্রধান শিক্ষক হিসাবে পদোন্নতি পেলেও ২০১৩ সালের প্রজ্ঞাপনে তাদেরকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে বিধায় প্রধান শিক্ষকদের জেষ্ঠতার তালিকায় চাকরির মেয়াদকাল ২০১৩ সাল থেকে গননা করার কথা। কিন্তু জেষ্ঠতা তালিকা প্রনয়নের সময় তাদেরকে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে গননা করা হয়েছে বিধায় তালিকা প্রণয়নে জেষ্ঠতা লংগিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিমা আখতার বলেন, জেষ্ঠতা তালিকা প্রণয়ন ও টাইমস্কেল প্রদানে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি। যা হয়েছে নিয়ম মেনেই হয়েছে। আমি ছুটিতে আছি পরবর্তীতে ফাইল দেখে বিস্তারিত জানাতে পারব।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ঘাটাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. সুজাত আলী খান বলেন, কর্তৃপক্ষ বিধি মেনেই আমাদের টাইমস্কেল প্রদান করেছে। কোন অনিয়ম হয়েছে বলি মনে করি না। নব্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের প্রতিপক্ষ ভাবছে সরকারি শিক্ষকরা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার