বঙ্গোপসাগরের নীল জলে ধুয়ে মুছে যাবে জাগতিক পাপ। এ মনোষকামনায় শনিবার সূর্যদয়ের সাথে সাথে পূর্নিমাতিথীতে লাখো সনাতন ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সমুদ্রে পুণ্যস্নান করবেন। সাধু, সন্ন্যাসীসহ দেশ-বিদেশী দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীরা এ মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য সৈকতে জমায়েত হয়েছে। গঙ্গাস্নান ও রাস মেলা উৎসবকে ঘিরে কলাপাড়া ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা এখন সাজ সাজ রব। পুরো সৈকত জুড়ে এখন পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। এদিকে যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাস মেলা ও গঙ্গা স্নানে আগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা সেবা প্রদানের জন্য র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি রিজার্ভ ফোর্স কুয়াকাটার সৈকতে মোতায়ন করা হয়েছে। সুপেয় পানি, চিকিৎসা টিম, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে চারদিকে দুই কিলোমিটার মধ্যে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলের পাশাপাশি পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রাখা হয়েছে।
কলাপাড়া শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রম যুব কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিলন সরকার জানান, কুয়াকাটায় পুণ্যস্নান শেষে পুণ্যার্থীরা কলাপাড়া পৌর শহরের শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রম প্রাঙ্গণে এসে রাঁধা কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন। শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা প্রতিষ্ঠাসহ অধিবাস অনুষ্ঠান করা হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচদিনের রাস মেলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা দোকানীরা বিভিন্ন পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসেছে। এ বছর রাস মেলায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বলে তিনি জানান।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন’র সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, গঙ্গা স্নান ও রাস মেলা উপলক্ষে হোটেল মোটেলের সিট বুকিং হয়ে গেছে। তবে যে পরিমান ভক্ত এবং দর্শনার্থীর আগমন ঘটে সে তুলনায় হোটেলের সংখ্যা কম থাকায় অনেকেই বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা গাছ তলায় আশ্রয় নিয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ জোনের সহকারি পুলিশ সুপার আব্দুল করিম জানান, গঙ্গাস্নান ও রাস মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের পাশাপাশি ট্যুরিষ্ট পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভির রহমান জানান, আগত পুণ্যার্থী, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া পুরো সৈকত সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আশা করি কোন ধরনের সমস্য হবে না।
বিডি প্রতিদিন/৩ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল