শিরোনাম
- সিদ্ধিরগঞ্জে তরুণীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণে’র অভিযোগে মামলা
- জিয়াউর রহমান দেশ থেকে বাকশাল দূর করেছিলেন: মঈন খান
- চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি প্রার্থী শরীফুজ্জামানের গণসংযোগ
- সিংড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গ্রেপ্তার
- কৃষকদের কাছ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন ধান-চাল কিনবে সরকার
- বীরগঞ্জে ‘ষষ্ঠক নেতা কোর্স’ সম্পন্ন, নেতৃত্ব বিকাশে স্কাউটিং-এর ওপর জোর
- নারায়ণগঞ্জে গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যসেবায় ডায়াথার্মি মেশিন বিতরণ
- ঢাকা-১৭ আসনে লড়বেন শহিদ জহির রায়হানের ছেলে, যা বললেন মা সুচন্দা
- আগাম ফুলকপি-বাঁধাকপি চাষে অনেকের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে
- বাগেরহাটের নতুন জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন
- ভিয়েতনামে স্যান্ডউইচ খেয়ে ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি
- শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম চালু করল ইউজিসি
- চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম না কমলে আমদানি: বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ৫ মামলায় হাইকোর্টে জামিন পেলেন আইভী
- ইজিবাইকের মোটরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে তরুণীর মৃত্যু
- মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডের জরুরি নির্দেশনা
- ‘সুনামগঞ্জের ধান-চালে আর্সেনিকের উপস্থিতি সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক কম’
- রাস্তায় নেমে চাপ সৃষ্টি করে ঐকমত্য হয় না : আমীর খসরু
- যুক্তরাষ্ট্রে সব এমডি-১১ কার্গো বিমান উড্ডয়ন বন্ধ
- বগুড়ায় থামছে না পেঁয়াজের ঝাঁজ, বিপাকে ক্রেতা
কুয়াকাটায় পুণ্যার্থীদের ঢল
সঞ্জয় কুমার দাস, পটুয়াখালী:
অনলাইন ভার্সন
জাগতীক পাপ মোচনের আশায় লাখো পুণ্যার্থী ভক্ত সমাগমে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব রাস-মেলা। আজ ঊষালগ্নে রাসস্নান শুরু হয়ে সকাল ৯টার দিকে শেষ হয়। এই উৎসবকে ঘিরে দু’দিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুয়াকাটায় আসতে শুরু করে পুণ্যার্থী-ভক্তরা। সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আগত পুণ্যার্থী-ভক্তরা রাস পুর্ণিমা তিথিতে মধ্যরাতে নাম সংকীর্তন, পূজার্চনা, পদাবলী কীর্তন শেষে ঊষালগ্নে পূণ্যস্নান করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। রাতে এ উৎসব ও মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মোঃ মাছুমুর রহমান। সারারাত ধরে চলে পূঁজা-আর্সনা, কীর্তন, ভগবতপাঠসহ ধর্মীয় কার্যক্রম। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস সমুদ্র স্নানের মাধ্যমে জাগতিক পাপ মোচন হয় আর পূর্ণ হয় মনের বাসনা। তাই প্রতিবছর তারা রাস উৎসবে অংশ নিয়ে সমুদ্র স্নান করে এ উৎসব পালন করে থাকেন। এবারের রাস মেলায় কুয়াকাটায় আগত পুণ্যার্থী-ভক্ত ও পর্যটকদের উপচে পরা ভীড়ে পর্যটন এলাকার হোটেল মোটেল দুই দিন ধরে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
রাঁস পূর্ণিমায় পুন্যার্থী ও পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে সাগর সৈকত পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার বীচে ঊষা লগ্ন থেকে ভক্তদের যেন রব উঠে পাপ মোচন ও পুণ্য লাভের আশায়। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন রোগ-শোক ধর্মীয় রীতি অনুয়ায়ী মানত করা পূজা-অর্চনা সম্পন্ন করেন পুরোহীত এনে। মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, ধান-দুর্বা ও বেল পাতা সমুদ্র জলে অর্পন করে গঙ্গাস্নান সম্পন্ন করেন পুন্যার্থীরা। স্নান শেষে পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন তারা। কেউ কেউ শ্রী শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ করছেন। কুয়াকাটা মুখরিত হয় জন-মানুষের মিলন মেলায়। শুধু পুণ্যার্থীরাই নয়, নানা ধর্ম-বর্নের মানুষ মিলিত হয় রাস লীলা, পূজা, সমুদ্র স্নান ও মেলানুষ্ঠানে। সৈকতে রাতে বিভিন্ন আকারের ফানুষ উরিয়ে আনন্দ উপভোগ করেন ভক্তবৃন্দ। এটি মূলত হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব হলেও এতে অংশ নেয় সর্বস্তরের মানুষ। রুপ নেয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উৎসবে।
অপরদিকে কুয়াকাটা হোটেল মোটেল মালিকরা জানান, এ বছর রাসমেলা ও গঙ্গাস্নান উৎসবে আবাসিক হোটেলগুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে ব্যাপক লোকের সমাগম হয়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর মেলায় ব্যবসায়ীদের বেচা কেনা খুবই ভাল হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে আনসার ভিডিপি, পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলে পর্যটন নগরী কুয়াকাটাকে। বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা ও চেক পোষ্ট এর মাধ্যমে পূন্যার্থীদের নজর রাখা হয়েছে।
কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের পুরোহীত শ্রী কৃপাসিন্ধু নিতাই দাস বলেন, রাস মেলায় ভক্তদের মহামিলন ঘটে সমূদ্র সৈকতে। বৃন্দাবনের পর থেকেই বিশ্বের নানা স্থানে গঙ্গাস্নান অথবা সমুদ্রস্নানের মধ্য দিয়ে পূর্ণিমা তিথিতে স্নান শেষে পাপমুক্তি লাভ করে ভক্তবৃন্দ।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক ও কুয়াকাটা রাস মেলা উদযাপন কমিটির নেতা কাজল বরন দাস জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারের রাসস্নান ও মেলা সু-শৃংঙ্খলভাবে পালিত হয়েছে। শুধু হিন্দুরাই নয় এখানে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে এসেছেন দেশ বিদেশের জাতি ধর্ম বর্ণ নিবিশেষে বহু মানুষ। রাতভর ভক্তবৃন্দ হরিনাম কির্তন, পালা গানসহ নানা পূজার্চনা আর আচার অনুষ্ঠান উপভোগ করে ঊষালগ্নে গঙ্গাস্নান করেছেন। ১৯২৭ সালে কুয়াকাটা সেবাশ্রম প্রতিষ্ঠাকালীণ থেকেই রাসস্নান উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। রাস পূর্নিমা উপলক্ষে এ বছর লাখ লাখ ভক্তবৃন্দ কুয়াকাটায় এসেছেন।
রাসমেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল হওলাদার জানান, প্রায় দুইশ' বছর ধরে পূর্ণিমা তিথিতে এ রাসলীলা উৎসব ও মেলা চলে আসছে। দ্বাপর যুগে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, হিংসা, হানাহানি দেখে দুষ্টের দমন ও সৃষ্টের লালনের জন্য স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নাম ধারণ করে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন।
বিডি প্রতিদিন/৪ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল
এই বিভাগের আরও খবর