নাটোরের সিংড়ায় গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে ১বছর ৩মাসের শিশু তুবাকে নেশাগ্রস্ত বাবার কোলে দেওয়ার শোকে শিশুটির মা শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিল।
গত সোমবার দুপুরে শালিশের মাধ্যমে দুপক্ষ ও কাজির উপস্থিতিতে বিবাহ বিচ্ছেদে ঘটনা ঘটে। পরে শালিশে সুকৌশলে নেশাগ্রস্ত তুহিনের হাতে শিশু তুবাকে তুলে দেয়া হয়। এদিকে মেয়ের শোকে মা সেতু বেগমের কান্না যেন থামছেনা। কথা বলতে বলতে বারবারই মুর্ছা যাচ্ছেন। তাকে গ্রাম্য ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ সংবাদটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এবং স্থানীয় চলনবিল ফেসবুক সোসাইটি, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিকদের তৎপরতায় সিংড়া থানার ওসি দ্রুত মেয়ের পরিবারের সহায়তায় রাতে নেশাগ্রস্ত পিতার কাছ থেকে ১৫ মাসের শিশুকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরে দেয়।
জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের বুড়িকদমা গ্রামের ফটিক সরদারের কন্যার সাথে নাটোর জেলার মেহের আলী মোল্লার পুত্র ইদ্রীস আলী তুহিনের বিয়ে হয়। বিয়েতে ৮৬ হাজার ১৩৩ টাকা দেনমোহর নির্ধারন করা হয়।
সেতুর অভিযোগ, তার স্বামী নেশাগ্রস্ত হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই সংসারে অশান্তি লেগেই ছিলো। মাঝে মাঝে তার স্বামী তার উপর শারিরীক মানসিক নির্যাতন করতো। এ নিয়ে কয়েক দফা দুপরিবারের মাঝে মনোমালিন্য হয়। নেশা থেকে ফিরে আসতে বার বার তুহিনকে বোঝানোর পরও কোন সুফল আসেনি।
সিংড়া থানার উপপরিদর্শক খায়রুজ্জামান রিপন বলেন, রাত তিনটার দিকে তুহিনের বাড়িতে অভিযান চালাই, প্রথমবস্থায় তাদের অসহযোগিতা পাই, দরজা খুলতে রাজি ছিলো না পরে প্রাচীর টপকিয়ে ঘরে প্রবেশ করে বাচ্চাকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরে দেয়া হয়। মাকে ফিরে পেয়ে তুবার হাসি মুখ সকল কষ্টকে দূর করে দিয়েছে।
সিংড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। নিষ্পাপ শিশুকে শালিশের মাধ্যমে বাবার কোলে দেয়ার অধিকার আইনগতভাবে নাই। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এসআই খায়রুজ্জামান কে দায়িত্ব দেয়া হয়। সে রাতেই অভিযান পরিচালনা করে তুবাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়।
বিডিপ্রতিদিন/ ১৫ নভেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান