প্রচন্ড শীতে কাঁপছে উত্তরের জেলা নীলফামারী। হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে মানুষসহ গবাদি পশু। সোমবার নীলফামারীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। আগুনের উত্তাপ নিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে মানুষজন। সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ।
শীতবস্ত্রের অভাবে দুস্থরা রাত পার করছেন নির্ঘুম। অনেকেই আগুনের উত্তাপ নিয়ে জেগে কাটাচ্ছে রাত। ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার আটটি ইউনিয়নের মানুষ শীতে কাতর হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ মানুষের নেই শীত বস্ত্র। চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে না পারায় তারা পড়েছে খাবার সংকটে।
তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে বয়স্ক ও শিশুরা। তারা শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়া ভীড় নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-জ্বরসহ নানান রোগীর। চিকিৎসকদের এসব রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে অনেকটাই হিমসিম খেতে হচ্ছে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৪১ হাজার নয়শ’ ৩৭ পিস কম্বল বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। এসব কম্বল প্রতি ইউনিয়নের ভাগে জুটেছে মাত্র সাতশ’ পিস। এ ছাড়াও আরও ২০ হাজার পিস কম্বল ও ১০ হাজার পিস সোয়েটার এবং জ্যাকেট চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চাহিদার এসব শীতবস্ত্র আজও এসে পৌঁছায়নি নীলফামারীতে। এতে শীতার্তরা দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে।
ডিমলা আবহাওয়া দফতরের ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, সোমবার সকাল ছয়টা ও ন’টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান জানান, সরকারীভাবে যেসব শীতবস্ত্র পাওয়া গেছে তা ইতোমধ্যে শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আরও যে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে সেগুলো পাওয়া গেলে যতদ্রুত সম্ভব তা দু:স্থদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক খালেদ রহীম জানান, সরকারীভাবে বরাদ্দ পাওয়া কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা থেকে পাওয়া শীতবস্ত্রগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল, এতিমখানা ও রেলওয়ে ষ্টেশনে আশ্রিতদের মাঝেও কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জেলা পুলিশ ও বিজিবির পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/৮ জানুয়ারি ২০১৮/হিমেল