দেশ-বিদেশের প্রায় ৪০০ কবির অংশগ্রহণে টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত হলো সুবিশাল কবিতা উৎসব। ৪র্থ বাংলা কবিতা উৎসবের আয়োজক স্থানীয় গণ-গ্রন্থাগার।
কবিতা উৎসবের সমাপনী দিনে সবচেয়ে আকর্ষণীয় অধিবেশনটি ছিলো দ্বিতীয় পর্বে। ভারত থেকে অংশগ্রহণকারীদের ৩৫ কবি এতে অংশ নেন। স্বরচিত কবিতা দিয়ে বিমুগ্ধ করেন শ্রোতাদের। একই পর্বে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয় কবি শ্যামলকান্তি দাশকে। তিনি ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। উদ্যোক্তা-সংগঠক কবি মাহমুদ কামাল সম্মাননা তুলে দেন। বাংলাদেশের ১০ জন বিশিষ্ট কবিও এই পর্বে কবিতা পড়েন। সঞ্চালনা করেন ভারতীয় কবি রথীন কর।
উৎসবের গুরুত্বপূর্ণ এই পর্বের প্রধান অতিথি কবি আল মুজাহিদী। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই কবি-ব্যক্তিত্বের জন্ম টাঙ্গাইলে। ইত্তেফাকের সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করেছেন। অতীব আকর্ষণীয় পর্বটিতে সভাপতিত্ব করেন কবি-কথাকার সালেম সুলেরী। তিনবাংলা লেখক ফেডারেশনের গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট তিনি।
অনুষ্ঠান সভাপতির বক্তব্যটি বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করে। সাহিত্যের সংস্কার ও বিশ্বমান বিষয়ে বিশ্লেষণ মেলে ধরেন। কবিতায় ‘মতো’-এর প্রয়োগ নেতিবাচক বলে জানান।
জনাব সুলেরী বলেন, বাক্যকে বলা হচ্ছে সিঁড়ি-স্বরূপ। একটি বাক্যে ১৩/ ১৪টি শব্দের পরই ৩/ ৪টি শব্দ বেমানান। অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তা ‘বাক্যদূষণ’ পর্যায়ে পড়ে। তিনি বলেন, বিশ্বমানের বাক্যে ‘সিঙ্গেল ডিজিট’-এর শব্দ গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ সর্ব্বোচ্চ নয় শব্দে বাক্য সাজানো জরুরী। ছোটগল্পে 5WH রাখতে বলা হচ্ছে। অর্থাৎ কি-কে-কেনো-কখন-কোথায় এবং কিভাবে। পরিপূর্ণ গল্পে এগুলোর প্রয়োগ জরুরী। কবিতাতেও এই ৬টি প্রশ্নের জবাব প্রয়োজন। তবে কবি ও পাঠক মিলেও তা পূরণ করা সম্ভব।
কবি সালেম সুলেরী বলেন, আজ আমার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। ২০ বছর আগে হারানো মাতৃ-অবয়ব শুধু নয়। আজ কবিতার উৎসবে ভেসে উঠছে টাঙ্গাইলের হারানো কবিমুখগুলোও। সর্বকবি তারাপদ রায়, আব্দুস সাত্তার, মীর আবুল খায়ের। কিংবা সাইয়িদ আতীকুল্লাহ, সাযযাদ কাদির, শাহনূর খান। অরুণাভ সরকার, কামাক্ষানাথ সেন, শ্যামল সেন প্রমুখ। প্রয়াত সকলের উদ্দেশ্যে নিবেদিত কবিতা দিয়ে শেষ করা হয় চলমান পর্ব।
বিডিপ্রতিদিন/ ০৮ জানুয়ারি, ২০১৮/ ই জাহান