পুরাতন বছরের সুখ-দুঃখ জড়ানো স্মৃতিকে পিছনে ফেলে নতুন বছরকে বরণ করতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রের ঢেউয়ের তরঙ্গের সাথে নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছে বিভিন্ন বয়সের হাজারো পর্যটক। বাংলা ১৪২৫ সালের প্রথম সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত আবলোকন করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমুদ্রপ্রেমী মানুষ প্রিয়জনদের নিয়ে ছুটে এসেছেন মনলোভা এই সৈকতে।
এদিকে নতুন বর্ষকে বরণ করতে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের উপস্থিতিতে দেখা দিয়েছে আবাসন সংকট। তবে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। সৈকতে রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকা ও খাবার হোটেল গুলোর অতিরিক্ত দাম নিয়ে পর্যটকদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এদিকে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিষ্ট পুলিশ ও নৌ-পুলিশের টহল জোরদার করেছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সড়ক যোগাযোগ ভাল থাকায় এ বছর আগত দর্শনার্থীরা কুয়াকাটার সৈকতসহ জিরো পয়েন্ট, ইকোপার্ক, লেম্বুর চর, শুটকি পল্লী, মিস্ত্রীপাড়া, রাখাইন মহিলা মার্কেট, গঙ্গামতি এলাকার বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান গুলোতে এখন উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কুয়াকাটার অভিজাত পাঁচ তারকা আবাসিক হোটল শিকদার রিসোর্টে জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালন করা হয় বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। এছাড়া পর্যটকদের আলাদা বিনোদন দিতে ৭২ ফুট দৈর্ঘ্য একটি ইলিশের ভাস্কর্যের পেটে বসে বাঙালী পরিবেশে মাটির ক্রোকারিজে খাবার পরিবেশন করা হয়েছে বলে জানান ইলিশ পার্ক কর্তৃপক্ষ।
একাধিক আবাসিক হোটেল মালিক ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে এক সপ্তাহ আগেই হোটেল মোটেল গুলোর সিট বুকিং হয়ে গেছে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মাছুমবিল্লাহ জানান, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আমি স্ব-পরিবারে কুয়াকাটায় এসেছি। আগেভাগে রুম বুকিং না দেয়ায় ভালমানের রুম পাইনি। এখানে খাওয়ার জন্য ভাল মানের হোটেল থাকলেও খাদ্য দ্রব্যের দাম অনেক চড়া। এখানে এসে বাংলা বছরের প্রথম সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ, কুয়াকাটার সৈকতসহ দর্শনীয় স্পটগুলো অসাধারণ লোগেছে বলে জানান এই পরিবার।
গ্রিন ট্যুরিজমের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন রাজু জানান, বর্ষবরণ উপলক্ষে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ে সৈকতে বাউল সঙ্গীত ও ঘুড়ি উৎসবের অয়োজন করে। এই আয়োজনে অসংখ্য পর্যটকসহ স্থানীয়রা অংশগ্রহণ করেন।
পাথওয়ের নির্বাহী পরিচালক মো.শাহীন বলেন, পর্যটন শিল্পকে বিকশতি করতে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, কুয়াকাটাসহ ঢাকায় নববর্ষকে ঘিরে নানা উৎসবের আয়োজন করেছি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ এএসপি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, সড়ক যোগাযোগ ভাল থাকার কারণে এবছর পর্যটকদের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। বর্ষবরণ উৎসবকে ঘিরে পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি ট্যুরিস্ট পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/ ই-জাহান