অব্যাহত বর্ষণে নাটোরের সিংড়া উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও নাগর নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়েছে বোরো চাষীরা। অব্যাহত বর্ষণের পানি নাগর নদীর সারদানগর বাঁধ দিয়ে চলনবিলে প্রবেশ করছে। এতে কষ্টের ফলস বোরো ধান তোলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি খাল ডুবে যাওয়ায় হুমকির মুখে ৫ হাজার একর জমির ধান।
অবস্থাদৃষ্টে, শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিলের কৃষকরা এখন উভয় সংকটে। একদিকে পানিতে ডুবছে ধান, অন্যদিকে নেই ফসল কাটার শ্রমিক। ফলে বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে চলনবিলের কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ৩০ এপ্রিলের ঘণ্টাব্যাপী ভারি বর্ষণ, বুধবার সহ আগের দুদিনের ব্যাপক বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সিংড়া উপজেলার আত্রাই এবং নাগর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানকার লক্ষাধিক কৃষক এখন আতঙ্কিত। নাগর নদীর সারদানগর এলাকার বাঁধ দিয়ে চলনবিলের ফসলি জমিতে প্রতিনিয়ত পানি প্রবেশ করছে। এতে সারদানগর এলাকার প্রায় দুই শতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার সারদানগর, চৌগ্রাম, একশিং তাড়াই, ডাহিয়া, বেড়াবাড়ীসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার চিত্র প্রায় একই রকম। মূলত ভারি বর্ষণের পানি ফুসে উঠে চলনবিলের কৃষকের ধান এখন পানির নিচে। এছাড়াও ঝড় বাতাসে আধা কাঁচা-পাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে কৃষকরা। সারদানগর গ্রামের কৃষক ইউসুব আলী ও চৌগ্রামের আতাহার আলী বলেন, ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের টাকায় তারা বোরো রোপণ করেছিলেন। ফসল ডুবে যাওয়ায় রীতিমত দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কিভাবে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করবেন। সারদানগর বাঁধ দিয়ে সিংড়ায় পানি প্রবেশের সত্যতা স্বীকার করে চৌগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা বলেন, তার ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করায় প্রায় শতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন চৌগ্রাম এলাকায় বেশকিছু ধান ডুবেছে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও বাতাসে তার উপজেলার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ শুয়ে পড়েছে। রোদের দেখা মিললে জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানি শুকিয়ে গেলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত কম হবেন।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন