পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টি থামছে না। ফলে কাটছে না নতুন করে পাহাড় ধসের শঙ্কা। তাই পাহাড়ে বৃষ্টি হলেই শুরু হয় মাইকিং। কারণ পাহাড়ে গায়ে মেঘে বৃষ্টির লুকোছড়ি খেলা দেখতে যতটাই না সুন্দর। সেখানে বাস করা মানুষের জন্য ততটাই ভয়ষ্কর। আর এমন গুমোট পাহাড়ে বেড়েছে আতঙ্ক। গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে পাহাড়ে বৃষ্টিপাত। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি, আবার কখনো ভারি বর্ষণ হচ্ছে পাহাড়ে। যদিও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে এখনই সরে যেতে মাইকিং অব্যাহত রেখেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। কিন্তু পাহাড়ধস নিয়ে নানা সংকটের মুখে পড়েছে সাধারণ জনগণ।
অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে এবার রাঙামাটিতে। গত জুন মাসে রাঙামাটি সর্বাচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ২৫৭ মিলিমিটার। এ মাসেও বৃষ্টির তীব্রতার আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
রাঙামাটি আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তা ক্যাচিনু মারমা জানান, রাঙামাটিতে কখনো হালকা, মাঝারি, আবার ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এছাড়া সারাদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত পাহাড়ের জন্য তেমন ভাল লক্ষণ না। এমনভাবে কতদিন চলবে তা বলা মুশকিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে প্রাণ গেলো ১১ জনের। এ ঘটনার পর পাহাড়ে বৃষ্টি দেখলে বাড়ে আতঙ্ক। কারণ পাহাড়ের মাটি এখনো নরম। তাই নিশ্চিত বলা যাচ্ছেনা কিছু। এছাড়া গেলো বছর রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের সেই চিহ্নি এখনো মুছে যায়নি। এখনো রয়ে গেছে সড়কে সড়কে ফাটল। তবে এখানে শেষ নেই। চলতি বছরেও নতুন করে বৃষ্টিপাতের কারণে আবারও ভেঙেছে বিভিন্ন সড়ক। ধসে পড়ছে পাহাড়, দেওয়াল, বসতঘর। উঠে গেছে সড়কের প্লাস্টার ও কংক্রিট। তাতেই বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, রাঙামাটিতে কয়কদিন ধরে টানা হালকা ও মাঝারি বর্ষণ হচ্ছে। এতে পাহাড়ধস আশঙ্কায় বাড়ছে। তাই এখনো যারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে তাদেরকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করে বলা হচ্ছে। এখন জনসাধারণ সচেতন না হলে কোন দুর্যোগ এড়ানো সম্ভব হবে না। তবে যে কোন দুযোর্গ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া গত বছরের পাহাড় ধসের ভয়াবহতা দেখার পর মানুষ এখনো অনেক সচেতন। আশা করছি এখন আগের মত কোনো ধরনের অঘটন ঘটবে না। এ বছর রাঙামাটি শহরের ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত খোলা রয়েছে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রও।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন প্রবল বর্ষণের কারণে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড়ধসে ১১ জন নিহত হন। তবে রাঙামাটি শহর ও অন্য উপজেলাগুলো কোনো ধরনের নিহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ জুলাই, ২০১৮/মাহবুব