কেটে নেয়া বোরো ধান গাছের গোড়া থেকে আবারও ধান উৎপাদন করে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানার কৃষক শরিফুল ইসলাম। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা এই পদ্ধতিকে ‘রেটুন শস্য আবাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলছেন, এটি কৃষকদের একটি বাড়তি ফসল এবং এতে কৃষকদের বিনাখরচে বাড়তি অর্থ উপার্জন সম্ভব।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রুহিয়া থানার ১৪নং রাজাগাও ইউনিয়নের রাজাগাও গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম ৩ বিঘা জমিতে রংঢ়ধযধহর ধান চাষ করেন। গত মে মাসের শুরুতে এসব ধান কেটে তিনি ঘরে তোলেন। এরপর ওই জমিতে পড়ে থাকা ধান গাছের মুড়ি (গোড়া) নষ্ট না করে পুনরায় ধান উৎপাদন করতে যত্ন নেন এবং ধান গাছের গোড়া কাঁচা থাকায় দ্রুত নতুন কুশি বের হয়। তবে কোনো প্রকার সেচ ছাড়াই শুধু মাত্র সামান্য পরিমাণে সার প্রয়োগ আর কয়েক বার কীটনাশক স্প্রে করে চাষকৃত এসব মুড়ি ধানের মাঝারি ফলন পেয়েছেন।
শরিফুল ইসলাম জানান, ওই জমির ধান কর্তন করেছেন এবং ৩ বিঘা জমিতে ফলন প্রায় ৫০ মন ধান পাবেন বলে আশা করেছেন। এতে নিজেই শ্রম দিয়ে সার ও কীটনাশক বাবদ তার খরচ হয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা। এতে এই ৫০ মন ধানই বাড়তি লাভ তার।
এলাকাবাসী সুমন, অনিক ইসলাম বলেন, আমরা তো আগে এসব ধানের গোরা কেটে গরু ছাগলকে খাওয়াইতাম। কিন্তু এবছর কাটা ধান গাছের গোড়া থেকে নতুন চারার ধান দেখে অবাক হয়েছি। শরিফুল চাচা এ ধান সংগ্রহ করে লাভবান হয়েছেন।
কৃষক শরিফুল ইসলামের বড় ছেলে নুর ইসলাম জানান, ইরি বোরো ধান কাটার পর গাছের গোড়া (মুড়ি) থেকে নতুন কুশি বের হয়। এগুলোকে আমার বাবা এবারে প্রথম নষ্ট না করে পুনরায় ধান উৎপাদনে যত্ন করেন। ধান কর্তন করেছেন ৩ বিঘা জমিতে আবারও ৫০ মণ ধান পাবেন বলে আশা করছেন।
এ পদ্ধতিতে ধান গাছের গোড়া (মুড়ি) থেকে ধানচাষ-এর বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরেশ সেন জানান হক জানান, ধানের মুড়ি থেকে আবার ধান চাষ করা যায়। ধানের গোড়া কাঁচা থাকে। তাই ধান কাটার পর এসব ধান গাছের মুড়ি থেকে কুশি বের হয়। আর এসব মুড়ি থেকে পুনরায় ধান উৎপাদন সম্ভব। এ বছর রুহিয়া থানার রাজাগাও ইউনিয়নের রাজাগাও গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম দরবেশ মুড়ি থেকে ধান চাষ করেছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৪ নং রাজাগাও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরেশ সেন আরো জানান, এটি বেশি লাভজনক না হলেও যেসব কৃষক নিজে পরিশ্রম করেন তারা বাড়তি ফসল পেয়ে লাভবান হতে পারেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার