বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সোনাকান্দায় কারখানা নদীতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত বছর নদী ভাঙনে প্রায় ৩শ’ ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। অব্যাহত নদী ভাঙনের কারণে নদীর দুই পাড়ের তিন গ্রামের বাসিন্দারা আতংকিত হয়ে পড়েছেন। বিবিআইডব্লিউটিএ'র ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করায় দুই তীরে এই ভাঙন শুরু হয়েছে বলে দাবী স্থানীয়দের।
ভাঙনকবলিত বাকেরগঞ্জের ৭নম্বর কবাই ইউনিয়নের সোনাকান্দা ও মাছুয়াখালী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা শাহ আলম, সহিদ মৃধা, আলম মৃধা, দীন ইসলাম ও বাদল গাজী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে চর কাটা শুরু হওয়ার পর থেকে দুই পাড়ে তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়। ভাঙ্গনরোধে চর কাটা বন্ধ করে ড্রেজিং মেশিন সরিয়ে নেয়ার দাবি তোলে স্থানীয় সোনাকান্দা, মাছুয়াখালী ও দক্ষিণ কবাই গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের দাবীর প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিএ দিনের বেলায় তাদের কর্মকান্ড বন্ধ রাখলেও রাতে আধারে অবাধে ড্রেজার মেশিন দিয়ে চর কাটছে। এ কারনে ভোরের আলো ফুঁটে ওঠার আগেই ভাঙ্গছে নদীর দুই পাড়।
গত বছরও একইভাবে ড্রেজিংয়ের কারনে নদীর দুই তীরের প্রায় ৩শ’ বাড়ি-ঘর, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যায়। এবারও নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি, কৃষি জমি।
স্থানীয়দের দাবি, বিভিন্ন সময় তিনটি গ্রাম রক্ষায় কারখানা নদীর চর কাটা বন্ধ করতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তারা কোন প্রতিকার পাননি।
তাদের দাবি, বর্তমানে ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে লঞ্চ চলাচলের জন্য কারখানা নদীর ওই স্থানে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এই ড্রেজিং না করে বিকল্প পথে পান্ডব নদী দিয়ে লঞ্চ চলাচল করলে চরকাটার প্রয়োজন হবে না।
কোনভাবেই চরকাটা বন্ধ না হওয়ায় সম্প্রতি গ্রামবাসীদের পক্ষে আইনজীবী আজাদ রহমান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ড্রেজিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক, বরিশাল নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক, বরিশাল জেলা প্রশাসক, বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বাকেরগঞ্জ থানার ওসি’কে আইনি নোটিশ দেন। কিন্তু এরপরও বন্ধ হয়নি নদীর চর কাটার কার্যক্রম।
তবে কারখানা নদীতে ড্রেজিংয়ের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী সালেহ মুছতানজির।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদও কারখানা নদীতে ড্রেজিংয়ের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবী করেন।
বিবিআইডব্লিউটিএ'র স্থানীয় কর্মকর্তারাও কারখানা নদীতে ড্রেজিংয়ের বিষয়ে কিছু জানেন না দাবী করে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার