৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় পটুয়াখালী জেলা। ১৮ নভেম্বর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টিতে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হলে সেখানে বেশ কয়েকজন পাক সেনা আহত ও নিহত হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর তাণ্ডবে শহীদ হন বহু মানুষ। শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত স্থান গণকবরগুলো নির্ধারণ করে সংরক্ষণের দাবি সকলের। অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবি তুলেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টা। পাকহানাদার বাহিনী অতর্কিত বিমান হামলা চালায় পটুয়াখালী শহরের কালিকাপুর এলাকায়। এতে মাতবর বাড়ীর ১৬ জন নারী-পুরুষ শিশুসহ শহীদ হন ১৯ জন নিরীহ মানুষ। নির্বিচারে চলে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ। এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে চোরাগুপ্তা হামলা চালাতে থাকলে ১৮ নভেম্বর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টিতে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পাক সেনা আহত ও নিহত হয়।
পরিস্থিতি বুঝে সেখান থেকে পালিয়ে যায় পাকসেনারা। এই বিজয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল আরও বেড়ে যায়। তারা বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শুরু করে। ৭ ডিসেম্বর তারা হানাদারদের কোণঠাসা করে ফেলে। ঐ রাতেই একটি লঞ্চে করে পটুয়াখালী থেকে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী। ৮ ডিসেম্বর মুক্ত হয় পটুয়াখালী। মুক্তিযোদ্ধারা প্রথমে শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্কে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে। তবে যুদ্ধকালীন শহীদদের গণকবর ও স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো অরক্ষিত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর বলেন, বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমাদের দেশ আজ স্বাধীন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের এ দাবি বারবারই উঠে এসেছে। তাই সরকারের কাছে আবেদন যাতে তদন্তের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাদ দিয়ে একটি স্বচ্ছ তালিকা তৈরি করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা