এক সময় স্বামী ও ২ ছেলে ১ মেয়েকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল লক্ষ্মী দাসের। হঠাৎ স্ট্রোকে অচল হয়ে যায় শরীরের একপাশ। নষ্ট হয়ে যায় দৃষ্টিশক্তি। এরপর থেকেই নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। ছাড়তে হয় স্বামীর সংসার। স্বামীর সংসারে আসে সতীন। সংসার থেকে বিতাড়িত হয় লক্ষ্মী দাস।
এখন মাটির তৈরি কুড়ে ঘরে ঠাঁই হয়েছে লক্ষী দাসের। ৭৫ বছর বয়সী মা কাঞ্চন দাসের ভিক্ষায় চলে লক্ষীর জীবিকা। লক্ষ্মী দাস ষাটবাড়ীয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মুকুল দাসের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের দাসপাড়ায় মায়ের বাড়িতে বসবাস করছেন।
লেবুতলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাটির তৈরি জরাজীর্ণ ঘরের বারান্দায় শুয়ে আছেন লক্ষী দাস। হাতের অসহ্য ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন। নেই ওষুধ কেনার টাকা। ঘরে চাল না থাকায় সকালে চুলোয় হাড়ি জ্বলেনি। ৭৫ বছর বয়সী মা কাঞ্চন দাস বেরিয়েছেন ভিক্ষায়। বাড়ি ফিরলে তবেই খাওয়া।
লক্ষী দাস জানান, ৬ বছর আগে ষাটবাড়িয়ায় স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় স্ট্রোক আক্রান্ত হন তিনি। তার বাম হাত-বাম পা অচল হয়ে যায়। সেই সাথে অন্ধ হয়ে যান তিনি। ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে চোখের চিকিৎসা করালেও ফেরেনি দৃষ্টি শক্তি। টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ। অন্ধ হওয়ার বছর ২ যেতে না যেতেই স্বামী আবারও বিয়ে করেন। অচল হওয়ায় সতীনের সংসারে জায়গা হয়নি তার। বড় ছেলে বিয়ে করে অন্যত্র ঘর বেঁধেছেন। আর বিয়ের পর মেয়ে চলে গেছে পরে ঘরে। ছোট ছেলে থাকে বাবার কাছে।
এখন বর্তমানে লেবুতলা গ্রামে মায়ের আঁচলে ঠাঁই হয়েছে লক্ষ্মীর। গ্রামের মানুষ আগে সাহায্য করলেও এখন করে না। মায়ের ভিক্ষার চালে চলে মা ও মেয়ের পেট।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার