রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত মির্জা আতিকুর রহমানের (৩৮) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের পূর্বসারেঙ্গা গ্রামে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের পূর্বসারেঙ্গা গ্রামের মৃত মির্জা আব্দুল কাদিরের ছেলে মির্জা আতিকুর রহমান। চাকরির সুবাদে ১৫ বছর আগে ঢাকায় আসেন। স্ত্রী, দশ বছর বয়সী মেয়ে মির্জা তাসফিয়া আক্তার তানহা ও চার বছরের ছেলে মির্জা রাফিউর রহমানকে নিয়ে ঢাকার এসিবি চত্বর মানিকদি বাজার আমতলিতে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তিনি। আতিকুর স্ক্যানওয়াল লগিস্টিক বাংলাদেশ (প্রা:) লি: কোম্পানিতে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে এফআর টাওয়ারের ৯ম তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়, তখন আগুন ছরিয়ে পরলে ওই ভবনের অফিসে আটকা পরেন আতিকুর। পরিবার অনেক খোঁজ করে তাকে পায়নি। পরে ওইদিন রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মরদেহ সনাক্ত করেন আতিকুরের চাচাতো ভাই মির্জা বাদল। শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে মরদেহ শরীয়তপুরের গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। দুপুর দুইটার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পর্ণ হয়।
মির্জা আতিকুর রহমানের স্ত্রী এনি আক্তার পলি বলেন, তখন দুপুর ১টা ১০ মিনিট। আমার কাছে মোবাইলে আতিকুর ফোন করে। আমাকে বলে, আমার জন্য দোয়া কর। তখন আমি বলি কেন একথা বলছো। তখন বলে অফিসে আগুন লাগছে। ধোয়ায় অফিস ভরে গেছে। আমি শ্বাস নিতে পারছি না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার আতিকুর মারা গেছে। সন্তানরা এখন কাকে বাবা বলে ডাকবে।
বিলাপ করতে করতে মির্জা আতিকুর রহমানের ভাই মির্জা আবুল হোসেন বলেন, এফআর টাওয়ারে আগুন লাগলে ধোয়ায় চার দিক অন্ধকার হয়ে যায়। সেই ভবনে আমার ভাই চাকরি করতো। সেদিন অফিসে ছিল, অফিস থেকে বের হতে পারেনি ভাইটা। অক্সিজেনের অভাবে শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছে আমার ভাই। আল্লাহ কেন এমন করলা?
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, দুর্ঘটনায় শরীয়তপুরের একজনের মৃত্যু হয়েছে শুনেছি। ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। জেলা প্রশাসন নিহতের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল