বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশার ঐতিহ্যবাহী দূর্গাসাগরে গঙ্গাস্নান (স্নানোৎসব) অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে শুরু হয় দিনব্যাপী এই স্নানোৎসব। হাজার হাজার পুণ্যার্থীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে দূর্গাসাগর দিঘি।
চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে স্নান করে পাপ থেকে মুক্তির আশায় প্রতি বছর দূর্গা সাগরে আসেন বিভিন্ন স্থানের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। তারা গঙ্গাদেবীর চরণে আত্মসমর্পণ করে পূজা, অর্চণা ও প্রার্থণাসহ নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পাপ মুক্তির বাসনার স্নান সমাপ্ত করেন। সকালে শুরু হয়ে স্নানোৎসব শেষ হয় সন্ধ্যায়।
সনাতন ধর্মাবলম্বি প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, জগতের যাবতীয় সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবর্তে ঘেরা জীবন থেকে পাপ মুক্তির বাসনায় হিন্দু পুণ্যার্থীরা প্রায় দুইশ’ বছর ধরে দূর্গা সাগরে স্নানোৎসবে অংশ নিয়ে আসছেন। গঙ্গাস্নান ঘিরে সাগর পাড়ের বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয়েছে গ্রামীণ মেলার। যেখানে মুড়ি, মুড়কি, খেলনা, রাধা চক্কর থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিকিকিনি হয়।
উৎসব ঘিরে পুরো এলাকাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রবীন ব্যক্তিরা জানান, ১৭৮০ খ্রিষ্টাব্দে চন্দ্রদীপ পরগনার তৎকালীন রাজা শীবনারায়ণ এলাকাবাসীর পানির সংকট নিরসনে স্ত্রী দূর্গা রানীর নামানুসারে দূর্গাসাগর দিঘি খনন করেন। ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় বার দিঘি পুনখনন করা হয়। ৪৫.৫৫ একর জমির মধ্যে দ্বীপ সহ জলভাগের পরিমান ২৭.৩৮ একর এবং স্থলভাগের পরিমান ১৮.০৪ একর। দিঘির চারপাশে ও মেঝের দ্বীপটিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, ঔষধী ও বনজ বৃক্ষ রয়েছে। এছাড়া দীঘির চারপাশ দিয়ে ১.৬ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে রয়েছে। ৩টি ঘাটলা ও মাঝখানে দ্বীপবিশিষ্ট এই দিঘি সবশেষ ১৯৯৭ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সংস্কার করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল