পার্বত্যাঞ্চলে এবছরও মিশ্র ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিভিন্ন বাহারি ফলের সুবাসে ভরপুর পাহাড়। নানা ধরনের এসব রসালো ফলের সয়লাব হয়েছে বাজার। প্রতিদিন বসানো বসছে মৌসুমী ফলের হাট।
এসব ফলের মধ্যে রয়েছে উন্নত জাতের কাঠাঁল, আনারস, লিচু ও আম। রাঙামাটির হাট-বাজারগুলোতে এখন চোখ জুড়ানো মৌসুমী ফলের সমারোহ। চাহিদা অনেক, দামও কম। তাই ক্রেতাদের আনাগুনা বেড়েছে হাট-বাজরে। স্বাধ ও স্বাধ্যের মধ্যে মিলছে যে কোন ফল।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুষ্টিগুনে ভরপুর পাহাড়ে উৎপাদিত এসব ফলে চাহিদা এখন দেশজুড়ে। রপ্তানি হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
রাঙামাটি জেলা কৃষি তথ্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, সদ্য মৌসুমে উপযুক্ত আবহাওয়ার কারণে রাঙামাটিতে আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। রাঙামাটি জেলার ১০টি উপজেলা নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী, বরকল, জুরাছড়ি, লংগদু, জুরাছড়ি, লংগদু, রাজস্থলী, কাউখালী ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় এসব ফলের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। জুম চাষের পাশাপাশি কৃষকদের মিশ্র ফল চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে। তাই ১২মাসে মিলছে পাহাড়ে কোন না কোন ফল। এরই মধ্যে পাহাড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে রেগুয়াই ও আমরুপালির । একই সাথে বাজার দখলে আছে লিচুর। চায়না-২, চায়না-৩ জাতসহ মিলছে বোম্বে লিচু। শুধু রাঙামাটি জেলায় লিচুর বাগান রয়েছে সাড়ে ১৮হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে। আনারস ৪ হাজার ২০০ হেক্টর ও কাঠাঁল আবাদ হয়েছে ১০হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমিতে। আর আমের বাগান রয়েছে ৩ হাজার ৩৭০টি ।
রাঙামাটির স্থানীয় ফল চাষী রাসেল চাকমা জানান, পাহাড়ে এবার আগাম মৌসূমী ফল এসেছে। অতিরিক্ত গরম পরার কারণে বিভিন্ন ফলমুল কাছে পেকে গেছে। তাই ফলগুলোর স্বাস্থ্য তেমন ভালো হয়নি। তবে ফলন বাম্পার হয়েছে। হিমাগার নাথাকার কারণে সংরক্ষণ এসব পচনশীল দ্রব্য। তাই লাভ নাকরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কষ্টের উৎপাদিত ফল।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সহজ পরিবহন ও সুষ্ঠু বাজারজাত ব্যবস্থা না থাকায় এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে শুধু কাঁঠাল, আনারস নয়- পার্বত্যাঞ্চলে প্রতিবছর বিভিন্ন জাতের কোটি কোটি টাকার ফল নষ্ট হচ্ছে। তাই লাভের মুখ দেখছেনা ব্যবসায়ীরা।
রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাঙামাটিতে বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার অধিক। বিশেষ করে উন্নত ও আধুনিক চাষাবাদের কারণে পাহাড়ে যে কোন মৌসুমে ফল পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য পাহাড়কে এখন মৌসুমী ফলের দেশ বলা হচ্ছে। কৃষকরা যদি আরও একটু সচেতন হয়, তাহলে এসব ফল উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাকা সম্ভব। তবে এ সম্ভাবনাময় কৃষি খাতকে উন্নয়নশীল করতে পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমী ফল সংরক্ষণ ও কৃষকদের স্বার্থে হিমাগার স্থাপন খুবই প্রয়োজন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার