২৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:১৫

চাচাতো ভাইয়ের লাঠির আঘাতে কলেজছাত্র খুন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

চাচাতো ভাইয়ের লাঠির আঘাতে কলেজছাত্র খুন

সোহেল তালুকদার। বয়স ১৮ বছর। সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে ঢাকায় একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরিতে যোগ দেয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কর্মস্থল ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কান্দাপাড়ায় বাবা-মায়ের কাছে আসেন। 

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিজ ঘরে শুয়ে থাকাবস্থায় বাড়িতে জমিজমা নিয়ে সোহেলের বাবা মোতালেব তালুকদারের সাথে তার বড় চাচা মোহন তালুকদারের কথাকাটির শব্দ শুনতে পায়। এক পর্যায়ে মোহন তালুকদার লাঠি নিয়ে সোহেলের বাবাকে মারপিট শুরু করে। বাবার চিৎকার শুনে বাবাকে বাঁচাতে দৌঁড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসে কলেজছাত্র সোহেল। এসময় মোহন তালুকদার ও তার ছেলে দুলাল তালুকদার, আলামিন তালুকদার, আলো তালুকদার, মেয়ে তাজনুর ও আলামিন তালুকদারের স্ত্রী প্রিয়া লাঠিসোটা দিয়ে সোহেল ও তার বাবা মোতালেবকে বেধড়ক লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে। 

পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে সোহেলকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নেয়া হলে রাত সাড়ে ৭টার দিকে সোহেল মারা যায়। সোহেলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সোহেলের ভাই-বোনসহ কলেজের সহপাঠী ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একজন মেধাবী তরুণ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার তীব্র প্রতিবাদ ও  হত্যকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

সোহেলের ভাই সাজু তালুকদার জানান, সোহেল পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করত। সে অত্যন্ত মেধাবী ও নম্র-ভদ্র ছিল। চাচা ও চাচাতো ভাইদেরও সম্মান করত। কখনো কোনদিন কারো সাথে বিরোধে জড়ায়নি। সকালে বাবার সাথে চাচার ঝগড়া চলাকালে চাচা তার বাবাকে মারপিট করার সময় বাবাকে বাঁচাতে যায়। এসময় চাচা মোহন তালুকদার ভাতিজা সোহেলকে ধরে রাখে আর চাচাতো ভাই দুলাল, আলোমিন, আলো, বোন তাজনুর, আলামিনের বউ প্রিয়া সোহেল ও তার বাবা মোতালকে প্রায় ১০-১৫ মিনিট বেধড়ক মারপিট করে। 

আরেক ভাই শামীম তালুকদার জানান, গুরুত্বর অবস্থায় মোতালেব ও ছেলে সোহেলকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থায় গুরুত্বর হওয়ায় সোহেলকে বগুড়া হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে সিরাজগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।  

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাউদ জানান, দু'পক্ষের মারামারি হয়েছে শুনেছি। তবে হত্যার বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর