১৬ অক্টোবর, ২০১৯ ১৫:০৫

স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। 

তিনি ফার্মের হাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষক। নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দেওয়ার নাম করে দিনের পর দিন এই টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। 

একাধিক অভিযোগকারী বলেন, তিনি একজন স্কুল শিক্ষক হয়েও  কৌশলে চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা এও জানান বিপুল কুমার হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং নিটকাত্মীদের কাছ থেকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি কোন মুসলমানের কাছে চাকরির নাম করে টাকা নেননি। 

তার নিকটাত্মীয় বিশ্বনাথ রায় (৬০) জানান, বিপুল কুমার রায় আমার স্ত্রীর বোনের ছেলে। তিনি আমার ছোট ছেলেকে সমাজসেবা অধিদফতরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে বলেন আপনার ছেলেকে সমাজসেবা অধিদফতরে চাকরি নিয়ে দিব। এক পর্যায়ে আমরা তার কথা মত ছেলের চাকরির জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেই। বিপুল টাকা নেওয়ার পূর্বে আমাকে বলেন, চাকরি না হলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু আমার ছেলের চাকরিও দিতে পারেনি এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।’

সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের শ্রী মদন চন্দ্র রায়ের ছেলেকে বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি দেওয়ার নাম করে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন স্কুল শিক্ষক বিপুল কুমার রায়। একই এলাকার অখিল বন্ধু নামে এক তরুণের পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) এর চাকরি দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নেন ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। জমি জায়গা বিক্রি করে সরকারি চাকরির আশায় টাকা দিয়েছিলেন অখিল বন্ধু। কিন্তু চাকরিও হয়নি টাকাও ফেরত পায়নি। 

অখিল বন্ধু বলেন, আমি বিপুল কুমারকে বিশ্বাস করেই টাকা দিয়েছিলাম। তিনি আমাকে শতভাগ চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। এখন টাকা ফেরত দিচ্ছেনা।

এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘আমার কাছে বিপুলের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের মৌখিক এবং লিখিত একাধিক অভিযোগ আসছে। আমি বিপুলকে এবিষয়ে বার বার নোটিশ করেছি কিন্তু সে আসে না। 

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা হয় বিপুল কুমারের বিরুদ্ধে। মামলা তদন্তকারী দেবীগঞ্জ থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমি মামলাটি ব্যাপকভাবে তদন্ত করেছি। বিশ্বনাথ রায় ও বিপুল কুমার রায় আত্মীয়। তাদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন হয়েছে এর সতত্যা পাওয়া গেছে।’

দেবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতি বলেন, ‘বিপুল মানুষকে চাকরি দেওয়ার নামে অনেকের কাছেই টাকা নিয়েছেন এমন অভিযোগ আমার কাছে আছে। বিপুলকে এ বিষয়ে ডাকলেও কোন সাড়া দেয় না। 

চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত বিপুল কুমার রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই আমার নামে মানুষ এগুলো মিথ্যে ঘটনা রটাইছে। এগুলো অসম্ভব। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর