২০ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:১১
সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে

নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করায় নেতাদের তোপের মুখে প্রতিমন্ত্রী পলক

নাটোর প্রতিনিধি:

নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করায় নেতাদের তোপের মুখে প্রতিমন্ত্রী পলক

ফাইল ছবি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় ও জামায়াত নেতার ছেলে ভাগ্নেকে ছাত্রলীগ সভাপতি করায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে জেলা আওয়ামী লীগের তোপের মুখে পড়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনের সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে বিগত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিতে সিংড়ার ইউপি চেয়ারম্যানদের বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার বিকেলে নাটোর এন এস সরকারী কলেজ মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে এসব অভিযোগ করেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল।

তবে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে জুনাইদ আহমেদ পলককে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেননি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। মিলনায়তনের ভেতরে যখন আওয়ামী লীগে বর্ধিত সভা চলছিল তখন বাহিরে পলকের বিরুদ্ধে চলছিল তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে সিংড়ার নেতাকর্মীদের মিছিল ও প্রতিবাদ সভা। এ মিছিলে নেতৃত্ব দেন সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান কামরান।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি অভিযোগ করেন, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিকের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক বিএনপি নেতা আদেশ আলী সরদারের পক্ষে অবস্থান নেন। পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিনও বিএনপি নেতা আদেশ আলীর পক্ষে সিংড়ার ১২টি ইউপির চেয়ারম্যান পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন। নৌকার পক্ষে সিংড়ায় প্রচারণা চালাতে গেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কোনো সহযোগিতা করেনি বরং দুর্ব্যবহার করেছে। নৌকা বিরোধীতার অভিযোগ এনে সম্প্রতি সিংড়ায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন না করতে চিঠি দেয়া হলেও তা মানেননি পলক। নিজে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হলেও অন্য নির্বাচনে নৌকা ও দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পলক বেইমানি করেছেন। পলকের অনুগত সিংড়ার নেতারা দম্ভ করে বলেন- তারা কেন্দ্রের নির্দেশনাই মানেন না আর জেলার নির্দেশনা তো দূরের কথা।

শিমুল আরও বলেন, সিংড়া পৌর জামাত ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি রওশন আলী প্রতিমন্ত্রী পলকের দুলাভাই। জামাতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রওশনের ছেলে খালিদ হাসানকে পলক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বানিয়েছেন।

পলকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে উপস্থিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আওয়ামী লীগ কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয় যে ভাই-ভাতিজা সবাইকে ঠাঁই দিতে হবে। এভাবে চললে এক সময় দলের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। দলের বিরুদ্ধে অভিযুক্তরা দলে থাকতে পারবে না আর মদদদাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিংড়ায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কমিটি গঠনের ব্যাপারে জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুলকে সার্বিকভাবে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।    

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে উদ্দেশ্য করে বলেন, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। অল্প সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট অর্জিত আস্থা ও বিশ্বাস অটুট রাখতে হবে।  

এ ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী পলকের বক্তব্য নিতে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যক্তিগত সহকারী রঞ্জিত কুমার জানান, তারা ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছেন। পরে কথা বলবেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে সিংড়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন কমিটি গঠন করেছে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের অনুসারীরা ক্ষিপ্ত ছিলেন।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর