১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ১২:২৮

সেই ঝাড়-ফুঁকের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা

অনলাইন ডেস্ক

সেই ঝাড়-ফুঁকের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা

ঝাড়-ফুঁকের পানি খেলে এবং তেল মালিশ করলে সব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, পূর্ণ হবে মনের সব আশা—এমন বিশ্বাসে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চর পলাশ গ্রামের একটি মাঠে মানুষের ঢল নেমেছিল গত শনিবার। তবে, দুই জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে কাঠুরিয়া কবিরাজ সবুজ মিয়ার এমন ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। 

সুশীল সমাজ বলছে, সমাজের প্রতিনিধি আর প্রশাসনই যখন এমন প্রতারণার আশ্রয় দেয় তখন ফুটে ওঠে বর্তমান সমাজের চিত্র। 

এদিন, কবিরাজের জন্য বানানো মঞ্চে উপস্থিত থাকায় প্রশ্ন উঠেছে পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদের ভূমিকা নিয়েও। নেটিজেনদের মন্তব্য, তাদের উপস্থিতি কাঠুরিয়া কবিরাজের এমন প্রতারণাকে বৈধতা দিয়েছে। যে কারণে মানুষ সরল বিশ্বাসে সেখানে উপস্থিত হয়।

এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, কবিরাজের বিষয়ে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে বিভিন্ন কথা শোনায় কৌতূহল থেকেই তিনি সেখানে যান।

অন্যদিকে, সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ টিটু জানান, তিনি পীর নন, সাধারণ মানুষের মতই। তার নাম সুবজ। কোরআন ও হাদিসের আলোকে তিনি মানুষকে কিছু উপদেশ দিয়েছেন। প্রায় ২০ মিনিটের মত তিনি সেদিন মঞ্চে অবস্থান করেন।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের পায়লা বেড় গ্রামের মৃত মোহাম্মদ সায়েদ ফকিরের ছেলে সবুজ মিয়া। তার পিতা মৃত সায়েদ ফকিরও কবিরাজি করতেন। পিতার মৃত্যুর অনেক দিন পর পর্যন্ত সবুজ মিয়া বন থেকে কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২০১৬ সালের দিকে হঠাৎ একদিন আধ্যাত্মিক শক্তিলাভের অবিশ্বাস্য ও অবাস্তব গল্প সাজান তিনি। সপ্তাহে চার দিন কাঠ কাটেন এবং তিন দিন কবিরাজি করেন। স্বপ্নে ফুঁ দেওয়ার এই তরিকা পেয়েছেন বলে দাবি তার। আর এ ভুয়া শক্তির গল্পকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণামূলক কবিরাজি ও ঝাড়ফুঁককে বাড়তি আয়-রোজগারের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন সবুজ মিয়া। কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের অন্ধবিশ্বাসী লোকজন তার ফাঁদে পা দেয়। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ বলেছেন, যেহেতু এক এক করে বোতলে ফুঁক দেওয়া সম্ভব নয়, তাই মাইকে ফুঁক দেওয়া হয়। গত শনিবার পীর আসার খবরে সকাল থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ চর পলাশ মাঠে আসতে থাকেন। কেউ পানিভর্তি বোতল, কেউ বোতলে তেল নিয়ে সমবেত হন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো নারী-পুরুষের ভিড় জমে যায়। এরমধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি ছিল। 


বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর