শিরোনাম
২১ নভেম্বর, ২০১৯ ১৫:০৫

টাকার বিনিময়ে টেষ্ট পরীক্ষায় ১৭৩ জনকে পাস করানোর অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি

টাকার বিনিময়ে টেষ্ট পরীক্ষায় ১৭৩ জনকে পাস করানোর অভিযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি টেষ্ট পরীক্ষায় নম্বর জালিয়াতি করে টাকার বিনিময়ে ১৭৩ জনকে পাস করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে আগামী ২৩ নভেম্বর দুইপক্ষকে নিয়ে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ইউএনও’র নির্দেশে উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা চিঠি দিয়েছে। টাকা নিয়ে গণহারে পাস করানোর ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন, সেলিমুল হক, রাশিদা বেগম জানান, গত ৫ নভেম্বর সাতৈর স্কুলের এসএসসি টেষ্ট পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়।  পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১৮৭ জনের মধ্যে ১৭৩ জনকে পাস দেখানো হয়। পরীক্ষার পর এলাকায় গুঞ্জন ছিল যারা ফেল করবে তাদের পাস করানো হবে টাকার বিনিময়ে। রেজাল্ট প্রকাশ হবার পর অবিশ্বাস্য ফলাফলে স্কুলের বেশীর ভাগ শিক্ষক হতবাক হন। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী স্কুলের খন্ডকালীন অস্থায়ী শিক্ষকদের দিয়ে খাতা দেখিয়েছেন। সেই শিক্ষকেরা ৫-৭ হাজার টাকার বিনিময়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পাস করিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবার সুযোগ করে দিয়েছেন। 

ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা জানান, স্কুল কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল কোন অস্থায়ী খন্ডকালীন শিক্ষককে দিয়ে খাতা দেখানো হবে না। যদিও প্রধান শিক্ষক সেই সিদ্ধান্ত মানেননি। খন্ডকালীন শিক্ষক ও স্কুলের করনিককে দিয়ে খাতা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। 

শিক্ষার্থীদের খাতা দেখতে গিয়ে দেখা গেছে, একজন ছাত্র কোন অংকই করতে পারেননি। সে সাদা খাতা জমা দিলেও শিক্ষক তাকে নম্বর দিয়েছেন। এছাড়া বেশীর ভাগ শিক্ষার্থী অংক এবং ইংরেজী বিষয়ে ফেল করলেও তাদের পাস দেখানো হয়েছে। যার ফটোকপি অভিযোগের সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া হয়েছে। 

এ বিষয়গুলো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভুমি) কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন। এ বিষয়টি নিয়ে সহকারী কমিশনার (ভুমি) শাকিলা বিনতে মতিন আগামী শনিবার বিষয়টি নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, অভিযোগকারী এবং স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে শুনানীর দিন ধার্য করেছেন। 

সহকারী কমিশনার (ভুমি) শাকিলা বিনতে মতিন জানান, অভিযোগের ভিক্তিতে দুইপক্ষকে নিয়ে শুনানীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুনানীর পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী জানান, তিনি টাকার বিনিময়ে কাউকে পাশ করাননি। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা একদমই মিথ্যা। যদি কোন শিক্ষক পরীক্ষার খাতায় বেশী নম্বর দিয়ে থাকে কিংবা টাকা নিয়ে পাশ করার বিষয়টি প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর