ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ভূইয়াগাঁতি এলাকার পুরাতন ব্রিজের পিলারসহ ডেবে যাওয়ায় এ মহাসড়ক দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এ কারণে উত্তরাঞ্চলের ১১ জেলা বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাও, গাইবান্ধা, নীলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় এবং ঢাকার মধ্যে যানবাহনগুলোর অধিকাংশ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে বিকল্প পথে কিছু যানবাহন চলাচল করছে। এতে সময় ও টাকা বেশি গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। সড়ক বিভাগের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে চালক ও যাত্রীরা জানান।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রমানিক জানান, ৪-৫ দিন আগে পুরাতন ব্রিজটি পিলারসহ ৫-৬ ইঞ্চি ডেবে গিয়েছিল। ওই অবস্থাতেই যানবাহন চলাচল অব্যাহত ছিল। কিন্ত বুধবার বিকেলে ব্রিজটির আরও ২-৩ ফুট ডেবে যায়। ওই অবস্থায় দিনভর ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হলেও সন্ধ্যার পর ব্রিজটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এ মহাসড়কে চলাচলকৃত যানবাহনগুলোকে বিকল্প পথে চলাচল করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দ্রুত পার্শ্ব রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। আশা করছি ভোরের মধ্যে বিকল্প সড়কটি নির্মাণ হয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আরও জানান, পুলিশের সহায়তায় মহাসড়কের চলাচলকৃত যানবাহনগুলো বিকল্প পথে সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ আঞ্চলিক, বগুড়ার ধুনট হয়ে ও কাজিপুর সড়ক দিয়ে সিরাজগঞ্জ শহর হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যুক্ত হচ্ছে এবং নাটোর হয়ে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক দিয়ে ঢাকার পথে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের উন্নতিকল্পে চারলেনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ৭০ বছর আগের পুরাতন ওই ব্রিজের পাশ দিয়ে বাইপাস রাস্তা নির্মাণ না করেই নতুন ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলছে। এ অবস্থায় পুরাতন ব্রিজের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ব্রিজটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয়ায় এ ঘটনা ঘটছে।
নতুন নির্মাণ ব্রিজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব জানান, প্রায় ২ মাস আগে থেকেই ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ, এ জন্য বিকল্প রাস্তা নির্মাণের জন্য পত্র দিয়ে ছিলাম। এরপর কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করলেও ওই সময় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য ব্রিজটি বুধবার ঢেবে গেছে।
এ বিষয়ে ট্রাক চালক আবির জানান, আমরা গতরাত থেকে উত্তরাঞ্চলে যাওয়া জন্য বসে আছি। বিকল্প রাস্তা দিয়েও ভারী ট্রাক নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য রাস্তাতেই রাত কাটাতে হচ্ছে। বাসযাত্রী আবুল হোসেন জানান, বগুড়া থেকে কোনো বাস ছাড়ছে না। সিএনজিতে করে অধিক ভাড়া দিয়ে সিরাজগঞ্জে আসতে হয়েছে। এতে যেমন টাকার অপচয় হয়েছে তেমনি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ কর্তৃপক্ষ সময়মত কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় জনগনকে এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাদের দাবি অতিদ্রুত এ রুটের আরও যেসকল ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ রয়েছে তা যেন মেরামত করে জনদুর্ভোগ কমাতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন