বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ৬ অক্টোবর বিসিবির নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন। সাবেক অধিনায়ক নির্বাচনে কাউন্সিলর হয়েছেন ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের পক্ষে। অথচ তার বিপক্ষে আপত্তিপত্র জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। আপত্তিপত্রে নাম লেখা সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহের। অথচ কানাডা প্রবাসী হালিম বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। কিন্তু ক্রিকেটপাড়ায় নানারকম গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছে। গতকাল ছিল আপত্তি শুনানির দিন। আজ বিকাল সাড়ে ৪টায় চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। তামিম কাগজপত্র নিয়ে শুনানিতে উপস্থিত হয়ে কথা বলেছেন। এরপর মিডিয়ার মুখোমুখিতে নোংরামি না করে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচনের অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে নিজের কাউন্সিলরশিপ বাতিলেরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘প্রেসার আমার ওপর অনেক আছে। আমার কাউন্সিলরশিপ বাতিল হলে অবাক হব না।’
খসড়া ভোটার তালিকার ওপর গত পরশু ৩০টি আপত্তি জমা পড়েছে। নির্বাচন কমিশনে তিন সদস্যের বাইরে আপত্তিগুলো জমা নিয়েছিলেন সিআইডির একজন প্রতিনিধি। তামিম ছাড়াও আপত্তি জমা পড়েছে বিসিবির সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদের নামের বিপরীতে। সাবেক সভাপতির বিপক্ষে আপত্তি জমা পড়েছে সময়ের পরে জমা দেওয়ার অভিযোগে। ফারুক ভোটার রেঞ্জার্স ক্রিকেট একাডেমির। নির্বাচন নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়িতে বিরক্ত হয়ে জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করা ক্রিকেটারদের মধ্যে কোয়াবের সভাপতি মোহাম্মদ মিথুন, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম, মুমিনুল হক, রুবেল হোসেন, শামসুর রহমানরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। সবার পোস্ট হুবহু একইরকম।
১৫ ক্লাব ও ৬ জেলাকে বাদ দিয়ে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ৬ অক্টোবর বিসিবির নির্বাচন হবে ২০২৪ সালের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। নির্বাচনে ক্যাটাগরি-১-এর ১০ পরিচালক নির্বাচন করবেন ৭ বিভাগ ও ৬৪ জেলার ভোটাররা। ১০ পরিচালকের মধ্যে দুজন করে পরিচালক নির্বাচিত হবেন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগ থেকে। একজন করে পরিচালক নির্বাচিত হবেন সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ থেকে। ক্যাটাগরি-২-এর ৭৬ ক্লাব ভোটার নির্বাচিত করবেন ১২ পরিচালক। ক্যাটাগরি-৩-এ ৪৫ ভোটার নির্বাচিত করবেন একজন পরিচালক। এই ২৩ পরিচালক ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) দুই পরিচালকসহ বিসিবির ২৫ পরিচালক নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ। পরিচালকরা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করবেন বিসিবির নতুন সভাপতি।
নির্বাচন নিয়ে যে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে, এনিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করা ও ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি মোহাম্মদ মিথুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘বিসিবি নির্বাচন ঘিরে যা যা হচ্ছে, এসব কখনোই কাম্য নয়। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের ভবিষ্যতের ব্যাপার। আমরা চাই, বিসিবি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক।’ সাবেক পেসার রুবেল হোসেন লিখেছেন, ‘বোর্ড প্রেসিডেন্ট আসা-যাওয়া যেন ক্রিকেটের টসের মতো। কখন কার ভাগ্যে জোটে বলা মুশকিল। সুন্দর পরিবেশে ক্রিকেট বোর্ড নির্বাচন হোক স্বচ্ছ, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা, শত্রুতা নয়। যেখানে জয়ী হবে কেবল ক্রিকেট।’
ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার আগে পোস্ট করেন তাইজুল ইসলাম। সমাজমাধ্যমে সবার আগে তিনি পোস্টে লেখেন, ‘বিসিবি নির্বাচন ঘিরে যা যা হচ্ছে, এসব কখনোই কাম্য নয়। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের ভবিষ্যতের ব্যাপার। আমরা চাই বিসিবি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক।’
বিসিবির নির্বাচনে ক্যাটাগরি-১-এ ভোটার হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক পাঁচ অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, মোহাম্মদ শফিকুল হক হীরা, এ এস এম রকিবুল হাসান, মোহাম্মদ আশরাফুল ও কাজী হাবিবুল বাশার। কোয়াবের প্রতিনিধি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার সামসুর রহমান শুভ। এ ছাড়া সাবেক ১০ ক্রিকেটারের তালিকায় রযেছেন, জাভেদ ওমর বেলিম, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, এহসানুল হক সেজান, মোহাম্মদ আলী খান, খালেদ মাসুদ পাইলট, রুহুল নিয়ামুর রশীদ রাহুল, মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান ঝড়ু, মুশফিকুর রহমান ও মাহমুদুল হাসান। এনএসসির কোটায় পাঁচজন ভোটার সেলিম শাহেদ, ইব্রাহিম খলিল উল্লা, সালমান হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও সাথিরা জাকির জেসি।
বিসিবির নির্বাচন নিয়ে ক্রিকেটার, সংগঠক সবাই স্পষ্টতই তামিম ইকবাল ও আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সমর্থনে দুই ভাগে বিভক্ত।