গোলাম রব্বানী ছোটন কি নতুন করে শিরোপার খাতা খুলতে যাচ্ছেন। তাঁর প্রশিক্ষণে মেয়েরা বয়সভিত্তিক কিংবা সিনিয়র জাতীয় দল সব টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবার আরেকটি সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে। তবে তা নারী নয়, সাফ পুরুষ চ্যাম্পিয়নশিপে। অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবলে বাংলাদেশের ছেলেরা অনায়াসে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। গতকাল কলম্বো রেসকোর্স স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হলে কোচ হিসেবে ছোটন প্রথমবার পুরুষ দলকে শিরোপা উপহার দেবেন। নতুন সাফল্যের খাতায় নাম লেখাতে পারবেন কি না এখন তারই অপেক্ষা। তা ছাড়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে বাংলাদেশ কখনো চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আর তা হতে পারে ছোটনেরই শিক্ষায়।
শক্তিশালী পাকিস্তানকে সেমিফাইনালে হারানোটা নিংসন্দেহে আনন্দের। বিশেষ করে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে হারলেও ফেবারিট ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছিল তাতে কিছুটা হলেও ভয়ে ছিলেন ছোটনের শিষ্যরা। ভয়কে জয় করলেও গোলের ব্যবধান এত কম হলো কেন, সেটাই আক্ষেপ। গ্রুপপর্বের ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও নেপাল দুই প্রতিপক্ষকেই বাংলাদেশ চারটি করে গোল দিয়েছিল। সেমিতে বাংলাদেশ যেভাবে শুরু করেছিল তাতে মনে হচ্ছিল পাকিস্তানকেও বড় ব্যবধানে হারিয়ে মাঠ ছাড়বে। ম্যাচের শুরুতেই চার মিনিটে পেয়ে যায় ২ গোল। নির্ধারিত ৮৬ ও যোগ করা তিন, সব মিলিয়ে ৮৯ মিনিটে আর গোল না পাওয়াটা একটু অবাকই বলা যায়। পাকিস্তান ম্যাচে ফিরবে সে সুযোগই পায়নি। রক্ষণভাগ অত্যন্ত দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে।
যাক, ব্যবধান বড় বা ছোট হোক। জয়ই বড় কথা, যেখানে আবার সেমিফাইনালের ম্যাচ। তিন মিনিটেই গোল পেয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল চমৎকারভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জালে বল পাঠান তিনি। প্রথম গোলে পাকিস্তানের গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারদের দায় ছিল বেশি। তবে এক মিনিট পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোলে পাকিস্তানিদের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। অপু রহমান দুর্দান্ত গোল করেন। তা দেখে কোচ ছোটন লম্বা লাফ দিয়ে উচ্ছ্বাস করেন। দ্বিতীয়ার্ধেও বেশির ভাগ বল দখলে ছিল বাংলাদেশের। আসলে পাকিস্তান কোনো ছকই কষতে পারেনি। মাঝে-মধ্যে আক্রমণ করলেও তা গোল হওয়ার মতো না।
ফাইনালে বাংলাদেশ খেলবে ভারতের বিপক্ষে। গতকাল অপর সেমিফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ভারত। গত বছর ভুটানে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে এই ভারতের কাছে হেরেই শিরোপাবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। এবার কী প্রতিশোধ নিতে পারবেন তরুণ ফুটবলাররা!