জয়ের খুব কাছে গিয়ে হারল বাংলাদেশ। ১১ রানে জিতল পাকিস্তান। ফলে এশিয়া কাপের ফাইনালে প্রথমবার মুখোমুখি হচ্ছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় মাত্র ১৩৫ রানও তাড়া করা সম্ভব হয়নি টাইগারদের। স্বল্প পুঁজি নিয়েও লাল সবুজদের হারিয়ে শিরোপার মঞ্চে পা রাখল পাকিস্তান।
দুবাইতে বৃহস্পতিবার অঘোষিত সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল সালমান আলীর দল। ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে থেমেছে লাল সবুজরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেছেন শামীম হোসেন। পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন হারিস রউফ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি।
৬ বছর পর এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। তবে বাজে ব্যাটিংয়ে সে সুযোগ হাতছাড়া করল তারা।
মোটামুটি সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই হতাশ করেন ব্যাটাররা। দলের খাতায় ১ রান যোগ হতেই উইকেট হারায় লাল সবুজরা। ইনিংস শুরুর প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমন। ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা করেছিলেন সাইফ। কিন্তু ওয়ান ডাউনে নামা তাওহীদ হৃদয় সঙ্গ দিতে পারেননি। ১০ বলে ৫ রান করে তিনি ক্যাচ তুলে দেন। দুটি উইকেট-ই তুলে নেন শাহিন আফ্রিদি। ৪ বল পর এজ হয়ে পয়েন্ট ক্যাচ তুলে দেন সাইফও। ১৫ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারের মারে ১৮ রান করে বিদায় নেন তিনি। এবার শিকারি হারিস রউফ।
দলীয় ৪৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। চারে ব্যাট করতে নামা মেহেদী হাসান ১০ বলে ১ ছক্কায় ১১ রান করে মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে ক্যাচ তুলে দেন। পঞ্চম উইকেটে আশা দেখিয়েও হাল ধরতে ব্যর্থ হন নুরুল হাসান সোহান। ২১ বলে ১৬ রান করে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সাইম আইয়ুবের বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। এরপর ক্রিজে নেমে ৯ বলে ৫ রান করে হার অনেকটা নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক জাকের আলী। সপ্তম উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন শামীম ও তানজিম হাসান সাকিব। জয়ের জন্য যখন ২০ বলে ৩৯ রান দরকার, তখন শাহিনের বল বানিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন শামীম। ২৫ বলে ২ ছক্কায় ৩০ রানে থামেন তিনি। দুই বল পর বিদায় নেন তানজিম সাকিবও। ১১ বলে ১০ রান করে রউফের বলে বোল্ড হন তিনি। এরপর ক্রিজে নেমে চার হাঁকিয়ে পরের বলেই বোল্ড হন তাসকিন আহমেদ। ১১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ রানে অপরাজিত থেকে হারের ব্যবধান কিছুটা কমান রিশাদ হোসেন।
পাকিস্তানকে জেতানোর পথে মাত্র ১৭ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন শাহিন। ৩৩ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নেন হারিস। ১৬ রান খরচায় ২ উইকেট পেয়েছেন সাইম আইয়ুব।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান সংগ্রহ করেছিল পাকিস্তান। তবে বল হাতে তাসকিন-রিশাদরা যেভাবে শুরু করেছিলেন তাতে শতরান তোলা নিয়েও শঙ্কায় ছিল সালমান আলীর দল। ৪৯ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছিল পাকিস্তান। কিন্তু এরপর ফিল্ডিংয়ে হঠাৎ ছন্দপতন হয় টাইগারদের। তিনবার জীবন পেয়ে ২টি ছক্কা হাঁকান শাহিন আফ্রিদি। এক জীবন পেয়ে ২ ছক্কা ও ১ চারের মারে ২৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন নাওয়াজ। ২৩ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রানে থামেন মোহাম্মদ হারিস।
লাল সবুজদের পক্ষে ২৮ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪.৫ ইকোনমিতে মাত্র ১৮ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন। ২৮ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী। ৩৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। ২৮ রান খরচায় উইকেটশূন্য ছিলেন তানজিম হাসান সাকিব।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ