রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ঘিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন জামায়াত ও বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা। নির্বাচনের নানা ইস্যুতে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল। প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের অভাবও সংকট বাড়িয়েছে। তাই ভোট নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে দীর্ঘ সংকটের আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মাঈন উদ্দিন বলেন, সংকট নিরসনে দফায় দফায় আলোচনা চলছে। প্রায় সবারই ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আশা করি, সংকট দীর্ঘ হবে না। নির্বাচন কমিশনের সংশোধিত তফসিলে রাকসু ভোট গ্রহণের কথা ছিল গতকাল। তবে এক সপ্তাহ আগে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার (পোষ্য কোটা) দাবি জানায় শিক্ষক-কর্মকর্তারা। তাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নিলে এর বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। লাঞ্ছিত হন উপ-উপাচার্য ড. মাঈন উদ্দিন। এর প্রতিবাদে সেই রাতেই শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানায় ছাত্রদল। অপরদিকে যথাসময়ে নির্বাচনের দাবি জানায় ছাত্রশিবির। পরে নির্বাচন কমিশনের ডাকা জরুরি সভা ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরস্পরকে কটাক্ষ করে স্লোগান দিতে থাকেন শিবির-ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সভা শেষে রাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয় ১৬ অক্টোবর। এর আগে, গত ৩১ আগস্ট প্রথমবর্ষের ভোটাধিকার নিয়ে ছাত্রদল, শিবির ও সমন্বয়কদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। এদিকে ২২ সেপ্টেম্বর শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জামায়াতপন্থি সংগঠন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ। সুষ্ঠুভাবে রাকসু শেষ করার আহ্বান জানান তারা। ২৪ সেপ্টেম্বর শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করেন কর্মকর্তারাও। তবে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা। গতকাল উপাচার্যের আশ্বাসে শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করে বিএনপিপন্থি সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পোষ্য কোটা ইস্যু এখনো পুরোপুরি সমাধান হয়নি। এদিকে শর্তসাপেক্ষে শাটডাউন স্থগিত করা হয়েছে। ভোটের আগে আবারও ইস্যুটি সামনে এলে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল হতে পারে। ফলে ভোট গ্রহণের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে। ফলে কোটার বিষয়টির সমাধান জরুরি।