১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১৬:২০

সূর্যমুখী ফুলের সমাহারে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সূর্যমুখী ফুলের সমাহারে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এই প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন কৃষকরা। জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. বিউল হক মজুমদার জানান, জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর বা ৩শ' বিঘা জমিতে ভোজ্য তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে ৮০ বিঘা, আশুগঞ্জে ২০ বিঘা, সরাইলে ২০ বিঘা, কসবায় ২০ বিঘা, নাসিরনগরে ৪০ বিঘা, নবীনগরে ৪০ বিঘা, বাঞ্ছারামপুরে ৩০ বিঘা, আখউড়ায় ২০ বিঘা ও বিজয়নগরে ৩০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর তিনশ' জনেরও উপরে কৃষক সুবিধাভোগী হিসেবে অংশ নিয়েছেন। 

তিনি জানান, সূর্যমুখী চাষের ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা বীজ ঘরে তুলতে পারবেন। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় তাহলে প্রতি বিঘা জমিতে ছয় থেকে সাড়ে ছয় মণ সূর্যমুখী ফুলের বীজ পাওয়া যাবে। এক মণ বীজ থেকে ১৮ কেজি তেল পাওয়া যাবে। প্রতি কেজি তেল বাজারে ২৮০ টাকা দামে বিক্রি করা যায়। সূর্যমুখীর তেল ছাড়াও খৈল দিয়ে মাছের খাবার এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া সূর্যমুখী চাষের পরও কৃষক যথাসময়ে আউশ ধানের চাষ করতে পারবেন। এসব তেল প্রক্রিয়াজাত এবং বাজারজাত করার ক্ষেত্রেও কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সূর্যমুখী প্রদর্শনী প্লটে গিয়ে দেখা যায়, ফুটে থাকা হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সমাহারে এক নয়নাভিরাম দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। চারদিকে হলুদ রঙের ফুলের মনমাতানো ঘ্রাণ আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের জমি। এটি যেন ফসলী জমি নয়, এ এক দৃষ্টিনন্দন বাগান। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকনে শুধু প্রকৃতি প্রেমীই নয় বরং যে কারো হৃদয় কাড়বে। তবে সূর্যমুখী ফুল চাষের লক্ষ্য নিছক বিনোদন নয়, মূলত ভোজ্য তেল উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য চাহিদা মেটাতে এ চাষ করা হচ্ছে। তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা এতে উৎসাহিত হয়ে উঠেবেন বলে কৃষি অধিদপ্তর মনে করছে।

কৃষকরা জানান, গত পৌষ মাসের প্রথম দিকে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেছেন তারা। একটি পরিণত সূর্যমুখী ফুলের গাছ ৯০ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। পরিণত হয়ে ইতোমধ্যেই সূর্যমুখী গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। ফেনীর সোনাগাজীতে সূর্যমুখী ফুল থেকে তেল তৈরির কারখানা আছে। তাদের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে। আমাদের উৎপাদিত সূর্যমুখী ফুলের বীজ তারা কিনবে। কৃষকদের কাছ থেকেই কোম্পানি সরাসরি বীজ কিনবে। 

আশুগঞ্জের বায়েক গ্রামের সূর্যমুখী ফুলের চাষি সারোয়ার আলম জানান, আগে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করতেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে কৃষি অফিসারের পরামর্শে পথমবার ৬৬ শতাংশ জমিতে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি।

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর